সিলেটে বিসিবি’র সৌজন্য টিকেট কালোবাজারে!

ভেতরে গ্যালারি ফাঁকা, বাইরে উত্সুক দর্শকদের ভিড়। টিকেটের জন্য হাহাকার। তবে ৪০০-৫০০ টাক কালোবাজারীদের হাতে গুঁজে দিলেই মিলছে সোনার হরিণ নামক টিকেট। আর এই টিকেট কালোবাজারিতে জড়িয়ে পড়েছেন বিসিবি ও ক্রীড়া সংস্থা সংশ্লিষ্ট কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা।

বিসিবি’র সৌজন্যেপ্রাপ্ত টিকেট সিলেটের সুধীজনকে না দিয়ে এগুলো বিক্রি করা হচ্ছে কালোবাজারে। আজ কালোবাজারে টিকেট বিক্রিকালে সিলেট ভেন্যুর এক টিম লিডারের গাড়ি চালককে আটক করে পুলিশ। পরে বিসিবি’র এক কর্মকর্তা তাকে পুলিশের কাছ থেকে ফোনে ছাড়িয়ে নেন।

বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই সিলেটে টিকেট নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়। অনলাইনে বিশ্বকাপের টিকেট ছাড়ার কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় সিলেট পর্বের সবগুলো ম্যাচের টিকেট। ফলে অনলাইনে চেষ্টা করেও টিকেট কিনতে পারেননি অনেকে। টিকেটের আশায় প্রতিদিনই স্টেডিয়াম সংলগ্ন কাউন্টারে ভিড় জমাতেন টিকেট প্রত্যাশীরা। তবে তাদের অনেকেই ফিরতে হতো হতাশা হয়ে। সব টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে বলে সে সময় সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে টিকেট প্রত্যাশীদের জানানো হয়।

আজ সকালে জিম্বাবুয়ে ও আরব আমিরাতের খেলা চলাকালে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা যায়, গ্যালারি প্রায় ফাঁকা। অথচ প্রধান ফটকের সামনে টিকেটের জন্য লোকজন জটলা বেধে আছেন। কয়েকজন কালোবাজারি বিসিবি’র সৌজন্যে প্রাপ্ত টিকেট বিক্রি করছেন। তারা প্রতিটি টিকেটের দাম হাকছেন ৫০০ টাকা।

এদিকে, দিনের দ্বিতীয় খেলা আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডের ম্যাচ শুরুর আগে বেলা ২টার দিকে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের টিকেট কাউন্টারে টিকেট কাটতে যান শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা জৈন্তাপুরের মাসুদ আহমদ ও তার চার বন্ধু। কাউন্টারে টিকেট না পেয়ে তারা আবু নামের এক কালোবাজারির ধারস্থ হন। আবু ৫টি টিকেটের দাম ২ হাজার টাকা হাঁকেন। শেষ পর্যন্ত দর কষাকষি করে টিকেটের মূল্য ১৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আবু তার সাথে থাকা এক সহযোগীর কাছ থেকে টিকেট এনে দেয়ার সময় পুলিশ তাকে ঝাপটে ধরে। এসময় আবুর সহযোগী পালিয়ে যায়।

পুলিশের কাছে আটকের পর আবু স্বীকার করে সে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেনু্য লিডার হোসাইন আহমদ সামুর গাড়ি চালক। খেলার প্রথম দিন থেকে সে বিসিবি’র সৌজন্যে প্রাপ্ত টিকেট কালোবাজারে বিক্রি করছে। টিকেট কালোবাজারিতে তাদের ৮-১০ জনের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। বিসিবি কর্মকর্তারা তাদের কাছে টিকেট সরবরাহ করে থাকেন। আটকের পর আবু ফোন দেয় ভেন্যু টিম লিডার সামুকে। আবুর ফোন পেয়ে ছুটে আসেন তিনি। এসময় তিনি আবুকে নির্দোষ দাবি করে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ আবুকে ছেড়ে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে।

একপর্যায়ে সামু ফোন দেন বিসিবি পরিচালক ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে। তিনি ফোনে কথা বলেন দায়িত্বরত এসআই সুদীপ্ত দে’র সাথে। নাদেলের ফোন পেয়ে সামু ও আবুকে সাথে নিয়ে এসআই সুদীপ্ত স্টেডিয়ামের ভেতরে চলে যান। পরে আবুকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এস আই সুদীপ্ত দে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান- টিকেট কালোবাজারির সময় আবুকে আটক করা হয়। বিশ্বকাপের প্রথম দিন থেকে সে কালোবাজারে টিকেট বিক্রির কথা স্বীকার করেছে।

এ ব্যাপারে জানতে বিসিবি পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম নাদেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

– See more at: http://www.bd-pratidin.com/2014/03/21/49807#sthash.YBfBNFEl.dpuf

Published by Amjonotablog

i am simple person

Leave a comment