লিঙ্গ প্রতিবন্ধী শিশু হস্তান্তরের সাজা হবে ১০ বছর জেল ১০ লাখ টাকা জরিমানার সুপারিশ

1520700_543494415741878_941575980_n

লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে কঠোর আইন প্রণয়নের সুপারিশ করেছে আইন কমিশন। কমিশন ইতিমধ্যে আইনের একটি খসড়াও তৈরি করেছে। এতে লিঙ্গ প্রতিবন্ধী শিশুকে প্রতিপালন না করে অন্য কারো নিকট হস্তান্তরকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

এদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে অস্বীকৃতি এবং সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি এ ধরনের অপরাধ করেন তাহলে প্রথমবারের জন্য সর্বোচ্চ ১০ বছর এবং দশ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া ধর্ম পালন করা এবং না করার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা নিশ্চিত করার সুপারিশও করা হয়েছে খসড়া আইনে। এতে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তিকে ধর্ম পালনে বাধ্য করা যাবে না এবং ধর্ম পালনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। এ সংক্রান্ত অপরাধে দুই বছর কারাদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। পুনরায় একই অপরাধের জন্য অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ড বা অন্যূন ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আইনের নাম দেয়া হয়েছে ‘বৈষম্য বিলোপ আইন’। এই আইনে বিচার হবে একটি বিশেষ আদালতে, নাম হবে ‘বৈষম্য বিলোপ বিশেষ আদালত’। আদালতের বিচারক হবেন জেলা ও দায়রা জজ। বিচার পদ্ধতি হবে সংক্ষিপ্ত, ৯০ দিনের মধ্যে বিচার সমাপ্ত করার বিধান করা হয়েছে খসড়ায়। ইতিমধ্যে আইন কমিশন আইনের একটি খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। আজ শনিবার আইন কমিশনের উদ্যোগে কমিশনে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকও এই সেমিনারে যোগ দেবেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে (১৯৯৬-২০০১) আইন কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়। আইন কমিশনকে দেশের প্রচলিত আইনকে যুগোপযোগী এবং নতুন আইনের খসড়া প্রণয়নের সুপারিশ করার দায়িত্ব দেয়া হয়। কমিশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বেশকিছু আইনের সংশোধন এবং নতুন আইনের খসড়া প্রণয়ন করে আইন মন্ত্রণালয়ে অনেকগুলো সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক চেয়ারম্যান এবং যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম শাহ আলম কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

দেশে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার জন্য পর্যাপ্ত আইন নেই। সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে, কেবল ধর্ম গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না। সংবিধানের এই নির্দেশনা অনুযায়ী আইন কমিশন ‘বৈষম্য বিলোপ আইনের’ একটি খসড়া প্রণয়ন করেছে। কমিশন বলছে, সকল প্রান্তিক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যারা নানাবিধ সামাজিক, পেশাগত, প্রথাগত বা অন্য কোন কারণে আইন প্রদত্ত অধিকার ভোগে বাধার সম্মুখীন হন তাদের সেই অধিকার ভোগে বাধা দূরীকরণের জন্য বিশেষ আইন বা আইনি ব্যবস্থা থাকা অপরিহার্য।

খসড়া আইনে যা বলা হয়েছে

খসড়া আইনে বলা হয়েছে, এ ধরনের অপরাধের বিচারের জন্য প্রতি জেলায় ‘বৈষম্য বিলোপ বিশেষ আদালত’ নামে এক বা একাধিক আদালত গঠিত হবে। বৈষম্যের শিকার যেকোন ব্যক্তি প্রতিকার চেয়ে এ আদালতে মামলা করতে পারবেন। সরকার সুপ্রিম কোর্টের সাথে পরামর্শক্রমে প্রত্যেক জেলার জেলা ও দায়রা জজকে বৈষম্য বিলোপ বিশেষ আদালতের বিচারক নিযুক্ত করবে। ওই বিচারক নিজ সাধারণ এখতিয়ারভুক্ত মামলা ছাড়াও এই আদালতের এখতিয়ারভুক্ত মামলাসমূহের বিচার নিষ্পত্তি করবেন অথবা জজশিপের যে কোন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের নিকট নিষ্পত্তির জন্য বদলি করতে পারবেন, সেক্ষেত্রে বদলিকৃত আদালতটি বৈষম্য বিলোপ বিশেষ আদালত হিসাবে গণ্য হবে। এই আইনের অধীনে দায়েরকৃত মামলা সমূহ “বৈষম্য বিলোপ মামলা” এবং “বৈষম্য বিলোপ ক্ষতিপূরণ মামলা” হিসাবে পৃথক রেজিষ্টারভুক্ত হবে। অপরাধের মামলা এবং ক্ষতিপূরণের মামলায় অভিযোগ গঠনের তারিখ হতে ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে আদালত বিচারকার্য সমাপ্ত করবে। এছাড়া আদালতের কোন নির্দেশ কোন ব্যক্তি অমান্য করলে, আদালত তাকে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর আদেশ করতে পারবেন, নির্দেশ অমান্যকারীর ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে আদালত তাকে উক্ত নির্দেশ প্রতিপালনসহ দুই মাসের কারাদণ্ডে এবং পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করতে পারবে। অমান্যকারী সরকারি কর্মচারী হলে এবং তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে বা অবহেলা করে নির্দেশ পালন করেননি প্রতীয়মান হলে আদালত তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে পারবে। এই আদালত প্রদত্ত আদেশ, রায় বা আরোপিত দণ্ড দ্বারা সংক্ষুব্ধ পক্ষ দণ্ডাদেশ প্রদানের তারিখ হতে ৬০ দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করতে পারবেন।

যেসব কার্যাবলী বৈষম্যমূলক ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ গণ্য করা হয়েছে

(ক) কোন বিশেষ ধর্ম পালন করা বা আদৌ কোন ধর্ম পালন না করার কারণে কোন প্রকার অধিকার ভোগে বাধা প্রদান; (খ) সেবালাভের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি; (গ) যে কোন প্রকারের শিক্ষা ও চিকিত্সা গ্রহণে এবং কর্মপ্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি; (ঘ) লিঙ্গ প্রতিবন্ধী হওয়ার অজুহাতে কোন শিশুকে পরিবারে প্রতিপালন না করে বিশেষ কোন গোষ্ঠীর নিকট হস্তান্তর; (ঙ) লিঙ্গ প্রতিবন্ধী হওয়ার এবং পিতৃপরিচয় প্রদানে অসমর্থতার অজুহাতে শিশুকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন, শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে বহিষ্কার; (চ) লিঙ্গ প্রতিবন্ধীকে পরিবারে বসবাসে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি; (ছ) লিঙ্গ প্রতিবন্ধীগণকে সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার লাভে বঞ্চিত; (জ) কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ধর্ম-বর্ণ-শিশু-নারী-পুরুষ, শারীরিক-মানসিক ও লিঙ্গ প্রতিবন্ধী, জন্মস্থান, জন্ম ও পেশা, অস্পৃশ্যতার অজুহাতে জনস্থল, সর্বজনীন উত্সব, নিজ ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রবেশ ও অংশগ্রহণে বাধা প্রদান করা।

আইন বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, বাস্তবে ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, পেশা, শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী, যৌনকর্মী, হিজড়া বা লিঙ্গ প্রতিবন্ধী, নারী-পুরুষভেদ, এমনকি জন্মস্থানের কারণেও অনেকে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু ভুক্তভোগীদের প্রতিকার চাওয়ার জায়গা নেই। আইনটি প্রণীত হলে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে আদালতে দ্বারস্থ হতে পারবেন।

 

সিলেটে বিসিবি’র সৌজন্য টিকেট কালোবাজারে!

ভেতরে গ্যালারি ফাঁকা, বাইরে উত্সুক দর্শকদের ভিড়। টিকেটের জন্য হাহাকার। তবে ৪০০-৫০০ টাক কালোবাজারীদের হাতে গুঁজে দিলেই মিলছে সোনার হরিণ নামক টিকেট। আর এই টিকেট কালোবাজারিতে জড়িয়ে পড়েছেন বিসিবি ও ক্রীড়া সংস্থা সংশ্লিষ্ট কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা।

বিসিবি’র সৌজন্যেপ্রাপ্ত টিকেট সিলেটের সুধীজনকে না দিয়ে এগুলো বিক্রি করা হচ্ছে কালোবাজারে। আজ কালোবাজারে টিকেট বিক্রিকালে সিলেট ভেন্যুর এক টিম লিডারের গাড়ি চালককে আটক করে পুলিশ। পরে বিসিবি’র এক কর্মকর্তা তাকে পুলিশের কাছ থেকে ফোনে ছাড়িয়ে নেন।

বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই সিলেটে টিকেট নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়। অনলাইনে বিশ্বকাপের টিকেট ছাড়ার কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় সিলেট পর্বের সবগুলো ম্যাচের টিকেট। ফলে অনলাইনে চেষ্টা করেও টিকেট কিনতে পারেননি অনেকে। টিকেটের আশায় প্রতিদিনই স্টেডিয়াম সংলগ্ন কাউন্টারে ভিড় জমাতেন টিকেট প্রত্যাশীরা। তবে তাদের অনেকেই ফিরতে হতো হতাশা হয়ে। সব টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে বলে সে সময় সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে টিকেট প্রত্যাশীদের জানানো হয়।

আজ সকালে জিম্বাবুয়ে ও আরব আমিরাতের খেলা চলাকালে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা যায়, গ্যালারি প্রায় ফাঁকা। অথচ প্রধান ফটকের সামনে টিকেটের জন্য লোকজন জটলা বেধে আছেন। কয়েকজন কালোবাজারি বিসিবি’র সৌজন্যে প্রাপ্ত টিকেট বিক্রি করছেন। তারা প্রতিটি টিকেটের দাম হাকছেন ৫০০ টাকা।

এদিকে, দিনের দ্বিতীয় খেলা আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডের ম্যাচ শুরুর আগে বেলা ২টার দিকে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের টিকেট কাউন্টারে টিকেট কাটতে যান শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা জৈন্তাপুরের মাসুদ আহমদ ও তার চার বন্ধু। কাউন্টারে টিকেট না পেয়ে তারা আবু নামের এক কালোবাজারির ধারস্থ হন। আবু ৫টি টিকেটের দাম ২ হাজার টাকা হাঁকেন। শেষ পর্যন্ত দর কষাকষি করে টিকেটের মূল্য ১৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আবু তার সাথে থাকা এক সহযোগীর কাছ থেকে টিকেট এনে দেয়ার সময় পুলিশ তাকে ঝাপটে ধরে। এসময় আবুর সহযোগী পালিয়ে যায়।

পুলিশের কাছে আটকের পর আবু স্বীকার করে সে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেনু্য লিডার হোসাইন আহমদ সামুর গাড়ি চালক। খেলার প্রথম দিন থেকে সে বিসিবি’র সৌজন্যে প্রাপ্ত টিকেট কালোবাজারে বিক্রি করছে। টিকেট কালোবাজারিতে তাদের ৮-১০ জনের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। বিসিবি কর্মকর্তারা তাদের কাছে টিকেট সরবরাহ করে থাকেন। আটকের পর আবু ফোন দেয় ভেন্যু টিম লিডার সামুকে। আবুর ফোন পেয়ে ছুটে আসেন তিনি। এসময় তিনি আবুকে নির্দোষ দাবি করে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ আবুকে ছেড়ে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে।

একপর্যায়ে সামু ফোন দেন বিসিবি পরিচালক ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে। তিনি ফোনে কথা বলেন দায়িত্বরত এসআই সুদীপ্ত দে’র সাথে। নাদেলের ফোন পেয়ে সামু ও আবুকে সাথে নিয়ে এসআই সুদীপ্ত স্টেডিয়ামের ভেতরে চলে যান। পরে আবুকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এস আই সুদীপ্ত দে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান- টিকেট কালোবাজারির সময় আবুকে আটক করা হয়। বিশ্বকাপের প্রথম দিন থেকে সে কালোবাজারে টিকেট বিক্রির কথা স্বীকার করেছে।

এ ব্যাপারে জানতে বিসিবি পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম নাদেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

– See more at: http://www.bd-pratidin.com/2014/03/21/49807#sthash.YBfBNFEl.dpuf

একটি রাজকীয় বিড়ালের আত্মকাহিনী!

গোলাম মাওলা রনি

সময় পেলেই আমি রাজপ্রাসাদের পশ্চিম বেদীতে উঠে হেলে পড়া সূর্যের অস্তগামী হবার দৃশ্য দেখি- নিতান্ত বিড়াল হলেও প্রকৃতির প্রতিদিনকার দুইটি অদ্ভুত দৃশ্য আমাকে চমৎকৃত করে। একটি হলো সূর্যোদয় আর অন্যটি সূর্যাস্ত। মাত্র ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রকৃতির এতো বড় পরিবর্তন দেখে আমি প্রায়ই অস্থির হয়ে পড়ি। প্রকৃতি নিয়ে আমার এতো ভাবনার মূল কারণ হলো আমার বাসস্থান অর্থাৎ রাজপ্রাসাদের অন্যান্য বাসিন্দাদের হম্বিতম্বি এবং রাজপুরীতে আগত অভ্যাগতদের ভাবসাব, ক্রিয়াকলাপ ও সং ভং দেখে আমি প্রায়ই ভাবি, আচ্ছা! আমি কি জীবিত নাকি মৃত! কিংবা আমি কি বাস্তবিকই সবকিছু দেখছি নাকি স্বপ্ন দেখছি! আজ আমি আমার জীবনের কিছু চমকপ্রদ ইতিবৃত্ত আপনাদেরকে শোনাব।

মূল কাহিনীতে যাবার আগে বলে নেই আমার পরিচয়। আমার নাম মিনি- এটি আমার মালিকের দেয়া নাম। আমার জন্ম শীতের দেশে। মালিকের ইচ্ছায় কৃতদাস হয়ে আমি নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে বসবাস করছি। আসমান ও জমিনের মালিক শীতের কবল থেকে বাঁচার জন্য আমার শরীরে বড় বড় লোম দিয়েছেন। আমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, পাকস্থলী এবং খাদ্যাভ্যাস মূলত শীতের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকার জন্য বানানো হয়েছিলো। কিন্তু আসমানের মালিকের দাস-দাসীদের ইচ্ছায় আমি নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের বাসিন্দা হয়ে বড়ই মুছিবতে আছি। এই দেশের আবহাওয়া আমার ভালো লাগে না, লোকজনের অদ্ভুত কর্মকাণ্ড আমার কাছে বড়ই অসহ্য এবং খাবার-দাবার একদম হজম হয় না। কিন্তু আমার তো কিছু করার নেই বা বলার ও ক্ষমতা নেই। কারণ আমি যে পশু- আমি যে ক্রীতদাস বা ক্রীতদাসী।

আমি শুধু আমার নাম বললাম এবং ইচ্ছে করেই বললাম না – আমি কি পুরুষ বিড়াল না নারী বিড়াল। আপনাদের দেশে পুরুষ বিড়ালকে বলে ‘হোলা বিলাই’ আর মেয়েদেরকে বলে ‘মেনী বিলাই’। দুটো উপাধিই আমার ভারী অপছন্দ- শুনলেই গা জ্বালা করে। কোনো কোনো এলাকায় বলে মর্দা এবং মাগী বিলাই! উফ! যত্তোসব অসভ্য শব্দ। আমি কিন্তু নিজের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করলাম না মানুষ্য সমাজের লিঙ্গ নিয়ে অতি বাড়বাড়ির কারণে। নারীবাদীরা বলবে – দেখো বিড়ালের কত্তোবড় সাহস! আমাদের গোত্রভূক্ত হতে চায়। অন্যদিকে, পুরুষরা বলবে- হায়! এদেশের যে কি হলো- একটা বিলাই আবার পুরুষ হতে চায়। যাহোক- নারী পুরুষের এত্তোসব টিটকারী ফিটকারী আমি একদম পাত্তা দেই না। কারণ আমার বর্তমান অবস্থার কারণে কতো রথী-মহারথীরা যে আমার মনোরঞ্জনের জন্য কতো কিছু করে তা যদি বলি তবে অনেকের মান-সম্মান নিয়ে টানাটানি লাগবে।

আজ যেহেতু নিজের আত্মকাহিনী বলতে বসেছি সেহেতু কিছু কথা তো বলতেই হবে। আগে নিজের একান্ত ব্যক্তিগত কিছু কথা বলে নেই। আমার গায়ের রং অনেকটা বাঘের মতো- বলতে পারেন কটা রংয়ের, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো অতো উজ্জ্বল নয়। আবার হায়েনা কিংবা ছাগলের মতো বিবর্ণও নয়। আমার মালিক আমাকে নিজ হাতে গোসল করান নিয়মিত শ্যাম্পু-সাবান এবং স্যাভলন দিয়ে। তারপর ড্রাইয়ার দিয়ে আমার ঘন ও বাহারী লোম শুকিয়ে ল্যাভেন্ডার মেখে দেন। মাঝে মধ্যে চিরুনি দিয়ে আমার লোমগুলো আঁচড়িয়ে দেন। আঁচড়াতে আঁচড়াতে তিনি দুষ্টামি করে আমার মোচগুলোতে টান মারেন- আর আমি লজ্জায় মিউ মিউ করে উঠি অনেকটা নতুন জামাই বা নতুন বউয়ের মতো। আমার এই সলজ্জ মিউ মিউ ডাক শুনে আমার মালিক ভারী আনন্দ পান। তার প্রিয় এক বান্ধবী তাকে প্রায়ই বলেন- আচ্ছা মিনিকে নিয়ে তুমি এতো মাতামাতি করো কেন? আমার মালিক বিরাট এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন- ও তুমি বুঝবে না। আমার মালিকের দীর্ঘশ্বাসের অর্থ তার বান্ধবী না বুঝলেও আমি কিন্তু বুঝি! আর সেই কাহিনীই ধীরে ধীরে আপনাদেরকে জানাবো।

আগেই বলেছি শীতের দেশে আমার জন্ম। আমাকে যখন এদেশে আনা হয় তখন আমার পূর্বতন মালিক খুব ভালো করে বলে দিয়েছিলো- আমি কি খাই, কখন ঘুমাই, কখন বাথরুমে যাই ইত্যাদি সবকিছু। আমার মালিক আমার জন্য আগে থেকে পূর্ব মালিকের কথামতো সব কিছু ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। আমি রাজ প্রাসাদে ঢুকে তো অবাক- এতো বড় বাড়ী আমি জীবনে দেখিনি। আমি বেশি অবাক হয়ে গেলাম আমার বেডরুমটি দেখে। বেশ বড়সড় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরা। আমার মতো কয়েকশ’ বিড়াল থাকতে পারবে। কামরার ওয়ালে নানা রকম ছবি এঁকে রাখা হয়েছে আমার মনোরঞ্জনের জন্য। বিড়াল, বাঘ, ইঁদুর, তেলেপোকা, শেয়াল, কুকুর, সিংহ, মহিষ, গণ্ডার, হরিণসহ নানা পশু-পাখি ও পোকামাকড়ের ছবি। আমার শোয়ার জন্য রয়েছে সুন্দর একটি খাট। একটি দোলনা রয়েছে অবসরে দোল খাওয়ার জন্য। টেলিভিশন রয়েছে যেখানে বিড়ালদের উপযোগী কার্টুন দেখানো হয় সব সময়। এ ছাড়া রুমের মধ্যে রয়েছে নানা রকম খেলার সামগ্রী। খুশিতে আমার মন নেচে উঠলো। এর পর ঢুকলাম বাথরুমে। ওরে বাবা- এতো দেখছি এলাহী কাণ্ড। জ্যাফুজীসহ বাথটাব, রয়েছে স্টিম বাথের ব্যবস্থা। ছোট একটি টেলিভিশনও রয়েছে বাথরুমে। টয়লেটের স্থানে গিয়ে দেখলাম অটোমেটিক ফ্ল্যাশ সম্বলিত কোহলার ব্রান্ডের একটি হাই কমোড এবং লো প্যান বসানো রয়েছে সেখানে। আমার মালিকের রুচিবোধ এবং আভিজাত্য দেখে আমি যারপরনাই প্রীত হলাম।

আগে আমার ঠিকানা ছিলো ডেনমার্কের রাজধানী কোপেন হেগেনের একটি পশু-পাখির দোকান। সেখানে আমার জীবন ছিলো নিতান্ত সাদামাটা। সারাদিন খাঁচায় বন্দী থাকতাম এবং সময়মতো খাবার খেতাম, মলত্যাগ করতাম এবং ঘুমাতাম। কিন্তু নতুন বাসস্থানে এসে আমি তো রীতিমতো ভীমরতি খাওয়ার পর্যায়ে পৌঁছালাম। আমি নিজেকে আর বিড়াল না ভেবে প্রাসাদের অন্যান্য বাসিন্দাদের মতো রাজা-মহারাজা কিংবা রানী-মহারানী ভাবতে শুরু করলাম। আমি সারা প্রাসাদ লেজ উচিয়ে ঘুরে বেড়াই আর মনের আনন্দে মিউ মিউ করে ডাকি। আমার মালিকের নিকট যারা স্বার্থ লাভের জন্য আসে তারা অতি অল্প সময়ের মধ্যেই আমার গুরুত্ব অনুধাবন করে ফেললো। তারা বুঝলো আমাকে যদি কেউ আদর করে কিংবা কোলে তুলে চুমো দেয়-তাহলে আমার মালিক ভারী খুশি হন। আমাকে সেবা দানকারী বা আদর যত্নকারী বা সোহাগকারী/কারীনি অতি দ্রুত আমার মালিকের কৃপা লাভের যোগ্যতা অর্জন করে ফেলে এমন কথা জানাজানি হতেই আমার কদর বেড়ে গেল সর্বমহলে।

রাজপ্রাসাদের বাসিন্দা এবং অভ্যাগতদের যত্নআত্মি এবং সীমাহীন পাত্তালাভের কারণে আমার মধ্যে এক ধরনের ভাবসাব চলে এলো। আমি বিড়াল হয়েও বাঘের মতো হেলেদুলে চলতে আরম্ভ করলাম। আচার-আচরণে এমন একটি অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তুললাম যেন লোকজন আমাকে অধিক মাত্রায় সমীহ করতে থাকে। হলোও তাই- আমি যখন-তখন আমার মালিকের নিকট চলে যেতে পারি। তিনি হয়তো রাজপুরুষ এবং রাজনারীদের সঙ্গে বৈঠকে ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু তাতে কি? আমি কখনো সখনো সেইসব বৈঠকে ঢুকে পড়ি। আমার মালিকের খাদেম-খাদেমারা চেয়ার ছেড়ে আমাকে ধরতে আসে। কেউ কেউ কোলে তুলে নেয়। ওয়া ওয়া মিনি- কিউ কিউ মিনি ইত্যাদি অদ্ভুত অদ্ভুত শব্দ উচ্চারণ করে আমাকে আদর করে। আমার গলা, ঘাড় ইত্যাদি জায়গায় হাত বুলিয়ে দেয়। কেউ কেউ চুমোও দেয়। তারপর পকেট থেকে সুন্দর সুন্দও চকোলেট বের করে আমাকে খেতে দেয়। আমি অত্যন্ত রাজসিক বিনয়ের সঙ্গে সেইসব উপহার গ্রহণ করি এবং কামরা থেকে বের হয়ে আসি।

আমার শরীর স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত খাবার হলো ক্যাটফুড। বিড়ালদের জন্য তৈরী করা বিশেষ পুষ্টিকর খাবার- বলতে পারেন বৈজ্ঞানিক ভাবে তৈরী করা সুষম খাদ্য। রাজ প্রাসাদে এসে কানাঘুষা শুনলাম- এখানকার বুয়া, দারোয়ান, মালি, ঝাড়ুদার এবং বাবুর্চিরা আমার সমালোচনা করছে। তারা বলছে, কি এমন লাট সাহেব বিড়ালরে বাবা-এসি করা রুমে ঘুমায়- ক্যাটফুড খায়, আবার চকলেট খায়- দোলনায় দোল খায়। টিভি দেখে- ঢং দেখে আর বাঁচিনে। মনে হয় একটা আছাড় দিয়ে বিলাইডার গু বাইর করে ফেলি। ওদের কথা শুনে আমার হাত-পা কাঁপতে লাগলো। ওরা আরো বললো, আমাদের দেশী বিড়াল কত্তো ভালো- মাছের কাঁটা খায়, ফেলে দেয়া পঁচা মাছ, ইঁদুর, তেলাপোকা ইত্যাদি খেয়েও তারা দিব্যি বেঁচে থাকে। এসব কথা শোনার পর আমি তৃতীয় শ্রেণির ওইসব লোকজন থেকে দুরে অবস্থান করতে থাকলাম।

রাজপ্রাসাদের বাসিন্দাদের অতিরিক্ত আদর আপ্যায়নে আমার শরীরে মেদ জমে গেলো। আমি বেশ মোটাসোটা হয়ে গেলাম। তাদের অনুরোধে আমি ক্যাটফুড ছেড়ে চকলেট, পোলাও, কোর্মা, কালিয়া কোপ্তা, জর্দা, ফিরনী ইত্যাদি খাওয়া শুরু করলাম। ফলে আমার পেটে গণ্ডগোল দেখা দিল। বেশির ভাগ সময় আমি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভূগতে আরম্ভ করলাম। সারাদিন পেটের মধ্যে পুট পুট করে। ফলে ঘন ঘন বায়ূ ত্যাগ না করলে আমি অস্থিরতা ও অস্বস্তিতে ভূগতে থাকি। আমি যেহেতু মানুষের খাবার খেতাম তাই আমার বিষ্ঠা এবং বায়ূত্যাগের দুগর্ন্ধ মনুষ্য সমাজের মতোই ছিলো।

একদিনের ঘটনা মনে হলে এখনো হাসিতে আমার দম বন্ধ হবার উপক্রম হয়। সেই দিনের পর বহুবার আমি অপকর্মটি করেছি। প্রত্যেকবারই একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে আমি মজা লুটি। কিন্তু প্রথম দিনের স্মৃতি আমি কোনদিন ভুলতে পারবো না। সেদিন ছিলো রবিবার। আমার মালিকের কামরায় ৩০/৪০ জন রাজপুরুষ আর রাজনারীর বৈঠক চলছিলো। অভ্যাসমতো আমি সেখানে ঢুকে পড়লাম। অনেকে আমার দিকে তাকালো বটে কিন্তু চেয়ার ছেড়ে উঠে কেউ কোলে নিলো না। সম্ভবত সবাই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় ব্যস্ত ছিলো। আমিও বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিলাম। কাউকে বিরক্ত না করে কামরাটির মধ্যে চুপচাপ পায়চারী করতে থাকলাম। আর তখনই ঘটলো দুর্ঘটনাটি। হঠাৎ করেই অসাবধানতা বশত ভরা মজলিশে ২/৩ বার আমার বায়ূ ত্যাগের ঘটনা ঘটে গেলো। অন্যান্য দিনের তুলনায় আমার কোষ্ঠ-কাঠিন্যের পরিমাণ বেশী হওয়ায় সেদিন দূর্গন্ধ ছড়ালো ব্যাপকভাবে। কি করা উচিত বুঝতে না পেরে আমি নেহায়েত ভদ্রলোকের মতো বসে থাকলাম।

আমার কৃত অপকর্মের দূর্গন্ধ সারা কামরায় ছড়িয়ে পড়লো। উপস্থিত ভদ্রনারী ও মহোদয়গণ ঘূণাক্ষরেও কল্পনা করতে পারলেন না যে- একটি বিড়াল অপকর্মটি করেছে। তারা বরং প্রত্যেকেই মহাবিরক্ত হয়ে একে অপরের দিকে তাকাতে লাগলো। ভদ্রতাবশতঃ কেউ কাউকে মুখফুটে কিছু বললো না বটে কিন্তু সবাই সবাইকে সন্দেহ করতে থাকলো। বেশী সন্দেহ হলো টাক মাথাওয়ালা লোকদের ওপর। যাদের পেটে সারাক্ষণ গণ্ডগোল থাকে তাদের নাকি মাথায় টাক পড়ে যায়। এসব লোকের মেজাজও থাকে ভীষণ গরম এবং মুখেও থাকে দুর্গন্ধ। টাকপড়া লোকদের মধ্যে একজনের প্রতি সবার সন্দেহ হলো সবচেয়ে বেশি। লোকটি খাটোখুটো ফর্সা প্রকৃতির। মুখমণ্ডল লম্বাটে- সারা মাথায় টাক- কেবল চোয়ালে লম্বা জুলফি রয়েছে। আগে দেশের সবচেয়ে পবিত্র অঙ্গনের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে সে করে নাই এহেন অপকর্ম নেই- ইদানিং তার দায়িত্ব অবশ্য অন্যক্ষেত্রে।

সারা দেশের লোকজন লোকটিকে ঘৃণা করে। আমার মালিকের দরবারের লোকজনও তাকে ঘৃণা করে। তারপরও লোকটি বেহায়ার মতো লেগে থাকে। মালিক সব কিছু জানেন এবং বুঝেন। কিন্তু অবস্থার কারণে কঠোর হতে পারেন না। তিনি জানেন লোকটিকে যদি বের করে দেন তবে বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে পাড়িয়ে মেরে ফেলবে। লোকটিকে সবাই কাগু বলে ডাকে। আমার সঙ্গে তার একটি মজার ঘটনা আছে। সেই প্রসঙ্গে পরে আসছি। তার আগে বলে নেই সেই দিনকার ঘটনা। সবার সন্দেহের দৃষ্টি পড়লো কাগুর ওপর। লোকজন মিটিমিটি হাসছে এবং মহাবিরক্ত হয়ে- কাগুর দিকে তাকাচ্ছে- আর কাগু নির্বিকার চিত্তে পা দুলিয়ে দুলিয়ে আমার মালিকের দিকে তাকিয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে। হঠাৎ করেই আমার মালিক অদ্ভুত এক কথা বলে বসলেন। তিনি বললেন- কীগো ভীমরুল কাগু! এতো গন্ধ আসছে কোত্থেকে, কামটা করলো কে! আর যায় কোথায়! মুহূর্তের মধ্যে শুরু হলো দমফাটানো হাসি। আমারও ভীষণ হাসি পেলো। সুযোগ বুঝে হাসতে হাসতে আমি রুম থেকে বের হয়ে গেলাম।অতিরিক্ত হাসার কারণে আমার পেটে চিন চিন ব্যথা শুরু হলো। আমি ওয়াশরুমে গেলাম এবং মুহূর্তের মধ্যে আমার সবকিছু ক্লিয়ার হয়ে গেলো। আমি বুঝলাম হাসি তামাশা এবং অনাবিল আনন্দ দেহের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

রাজপ্রাসাদের বাসিন্দা হিসেবে প্রতিনিয়ত অনেক কিছুই দেখি- কখনো চক্রান্ত, কখনো প্রহসন আবার কখনো মুনাফেকি। আমার মালিকের সামনে বসে লোকজন একধরণের কথা বলে। আবার পিছনে গিয়ে ঠিক উল্টোটা। স্বার্থে মিললে সবাই এক। আবার স্বার্থে সামান্য একটু আঘাত লাগলেই গোখরা সাপের মতো ফোঁস ফাঁস করে ওঠে। কিন্তু ঐ ফোঁসফাঁস পর্যন্তই। কারণ দংশন করার সাহস কিংবা হিম্মত ওদের নেই। ওরা ওদের লিঙ্গ পরিচয় হারিয়ে সবাই একই জাতি হয়েছে। ওরা এখন আর কেউ নারী কিংবা পুরুষ নয়। ওরা মুসলমান কিংবা হিন্দুও নয়- ওরা দালাল, ওরা স্বার্থপর, ওরা চক্রান্তকারী চাপাবাজ, ওরা বেইমান এবং মোনাফেক। তাইতো ওদের ইজ্জতের দিকে তাকিয়ে আমি আমার লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করলাম না। কারণ ওদের পোলাও কোর্মা, চকলেট বিরিয়ানী খেতে খেতে আমি কি আদৌ বিড়াল আছি না অন্য কোন জানোয়ার হয়ে গেছি- এই নিয়ে ইদানিং আমার মনে ঘোরতর সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

কাগুর সঙ্গে আমার একটি ব্যক্তিগত ঘটনার কথা বলছিলাম। পূর্বেই বলেছি উল্টা পাল্টা খাবার খেয়ে আমার শরীরে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিয়েছে। আমার নিয়মিত জলত্যাগের সমস্যা হচ্ছে। আগের মতো এক সঙ্গে জলত্যাগ হয় না। বরং বুড়া মানুষের মতো ফোঁটা ফোঁটা করে দিনে ১০/১২ বার কর্মটি করতে হয়। একবার মনে হলো ডায়াবেটিস হয়েছে। পরীক্ষা করে দেখলাম শরীরে ডায়াবেটিস নেই। মূলত কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেই জলত্যাগের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আপনারা হয়তো একটি বিড়ালের মুখে জলত্যাগের মতো প্রমিত বাংলার ব্যবহার দেখে বিস্মিত হচ্ছেন। আপনাদের দেশে জলত্যাগকে সাধারণত প্রশ্রাব বলা হয়। গ্রাম বাংলায় বলে মুত। দুটো শব্দই ভদ্র সমাজে বলা যায় না। অনেকে অশ্লীল ও অশ্রাব্য বলে বিষয়টি এড়িয়ে যায়। আমি অবশ্য অন্য কারণে প্রমিত বাংলার চর্চা করছি। আমার চারপাশে সবাই দিবারাত্র এতো বেশী অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে সেক্ষেত্রে বিড়াল হলেও আমার মনে হচ্ছে এই অশ্লীলতা থেকে বের হওয়া উচিত। তাইতো গু মুতের মতো শব্দ বাদ দিয়ে বলছি বিষ্ঠা, জলত্যাগ ইত্যাদি।

যা বলছিলাম- নিজের জলত্যাগের সমস্যার কারণে মাঝে মধ্যে নিজের অজান্তে দু’চার ফোঁটা বের হয়ে যায় বিভিন্ন জায়গা বেজায়গায়। একবার এক রাজপুরুষ আমাকে সোহাগ করে কোলে নিলো। তার কোলের ওপর বসে আমি আরাম ফরমাচ্ছিলাম আর উনি আমার শরীরের জায়গা-বেজায়গায় হাত বুলিয়ে আদর করছিলেন। আবেশে আমার ঘুম চলে আসছিলো। হঠাৎ টের পেলাম- কাজ হয়ে গেছে! বোধ হয় কয়েক ফোঁটা জলত্যাগ ঘটে গেছে। আমি ভারী ভয় পেলাম। আবার লজ্জাও পেলাম। কিন্তু আশ্চর্য আমাকে আদর সোহাগকারী লোকটি টেরই পেল না। ফলে কিছুক্ষণ পর কর্মটির জন্য আমি বেশ আনন্দিত ও আরাম বোধ করতে থাকলাম। মনুষ্য কোলে বসে ওম ওম শরীরে জলত্যাগের যে কি আনন্দ- তা কেবল সেই বুঝতে পারবে যে কিনা কর্মটি করার সুযোগ লাভ করেছে।

এই ঘটনার পর থেকে আমার নফস বড়ই দুষ্টামী আরম্ভ করলো। কারণ একমাত্র আমার মালিক ছাড়া যেই আমাকে কোলে নিতো এবং আদর সোহাগ করতো আমি সুযোগমতো তার কোলে দু’চার ফোটা জলত্যাগ করতাম। তারা এযাবতকালে কেউ আমার কুকর্মটি শনাক্ত করতে পারেনি। আমার মাঝে মধ্যে সন্দেহ হতো- হায় আল্লাহ! এদের কি নাক নেই! এরা কি ঘ্রাণ নেবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে! তো একদিন ভীমরুল কাগু আমাকে কোলে তুলে নিলো। তারপর পকেট থেকে একটি চকলেট বের করে আমাকে খাওয়ালো। প্রাসাদের মধ্যে একটি পদ্মপুকুর রয়েছে। কাগু আমাকে নিয়ে পদ্মপুকুরের ঘাটে বসলো। তখন সময়টা ছিলো বসন্তকালের পড়ন্ত বিকেল। মৃদুমন্দ বাতাসে আমার ঘন এবং রেশমী লোমগুলো উড়ছিলো আর সেখান থেকে ল্যাভেন্ডারের সুগন্ধ বের হচ্ছিলো। কাগু বারবার মাথা নুইয়ে আমার লোমের ঘ্রাণ শুঁকছিলো। এই সময় আমি খুব ভালো করে তার কেশহীন চটচটে টাক মাথা দেখার সুযোগ পাচ্ছিলাম। আমার বড়ই আফসোস হচ্ছিলো কাগুর জন্য। কারণ এতো সুন্দর বাতাস-অথচ সেই বাতাসে উড়াবার মতো কাগুর মাথায় একটি চুলও নেই -আহারে বেচারা!

আমার ভাবনা বেশীক্ষণ স্থায়ী হলো না। বরং মনে হলো- বিকেলের এই মনোরম পরিবেশে আমি কাগুর কোলে অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু বেশী করে জলত্যাগ করি। কিন্তু হঠাৎ করে একটি ভাবনা মনে আসতেই আমার চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো! আমার মনে হলো- আচ্ছা সাধারন মানুষ লোকটিকে এতো ঘৃনা করে কেনো? রাজ প্রাসাদের সবাই কেনো তাকে নিয়ে হাসি তামসা করে। একদিন আমি আড়ালে দাড়িয়ে প্রাসাদের একজন ভালো মানুষের আক্ষেপ শুনছিলাম- তিনি বলছিলেন- লোকটিকে রাস্তা থেকে তুলে এনে আমার মালিক দায়িত্বপূর্ন পদে বসিয়েছিলেন এবং সবচেয়ে পবিত্রতম স্থানের ভার অর্পন করেছিলেন। দায়িত্ব পাবার সঙ্গে সঙ্গে লোকটি রাতারাতি বদলে যায়। ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম, জুলুম, জাহেলী, মিথ্যাচার, অনাচার, ব্যাভিচার- এমন কোন কুকর্ম নেই যা সে করেনি। সারা শহরের রঙ্গবাসর বাসিন্দারা তার মনোরঞ্জনের জন্য সব কিছু করেছে। লোকটি নাকি ভিনদেশে গিয়েও নিয়মিত আকাম-কুকাম করে আসে।

লোকটি সম্পর্কে এসব কথা মনে আসতেই ঘৃণায় আমার সারা শরীর রি রি করে উঠলো। আমার পেট থেকে তার দেয়া চকোলেট বের হয়ে আসতে চাইলো। আমি নিজেকে সংযত করে বমি রোধ করলাম। কারণ লোকটির শরীরে বমি করতেও আমার রুচিতে বাধছিলো। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম- অনেকের কোলে জলত্যাগ করলেও এই লোকটির কোলে আমি ও কাজটি করবো না। ওর শরীর আমার জলত্যাগেরও উপযুক্ত জায়গা নয়। আমি লাফ দিয়ে ওর কোল থেকে নেমে পড়লাম এবং আমার বেডরুমের দিকে এগুতে থাকলাম। একবারও পেছনে ফিরে তাকালাম না।

জীবনের বহু দম ফাটানো অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। রাজ প্রাসাদের একজন বাসিন্দা হিসেবে যা দেখেছি কিংবা যা শুনেছি অথবা যা বুঝেছি তার চৌম্বক অংশগুলো-আগামী দিনে আপনাদেরকে শোনাবো যদি আপনারা এই অধম বিড়ালের মুখ থেকে সেই সব কাহিনী শুনতে চান।

 

লেখকের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে সংগৃহীত

– See more at: http://www.bd-pratidin.com/2014/03/18/49271#sthash.CniGCE8r.dpuf

পুলিশ বাসায় গেলে করনীয়

তথ্য অনুসন্ধান বা অপরাধী খুঁজতে পুলিশ বাড়ি যেতে পারে। এ সময় যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয় সেজন্য রয়েছে আইনের সুনির্দিষ্ট কিছু বিধান। এ নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন রাজারবাগ ডিটেকটিভ ট্রেনিং স্কুল(ডিটিএস)-এর ইন্সট্রাকটর মো. আফজাল হোসেন।

9

3265

বাসায় কী কী কারণে পুলিশ আসতে পারে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বিভিন্ন কারণে বাসায় পুলিশ আসতে পারে। যেমন, যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়, তখন আসামী গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে পুলিশ যেতে পারে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যদি জানা যায় কোনো বাড়িতে বা সুনির্দিষ্ট কোনো জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্র বা বিষ্ফোরক পদার্থ মওজুদ আছে তখন পুলিশ তল্লাশির জন্য সেই জায়গায় যেতে পারে। এছাড়া কোনো মামলার পলাতক আসামীকে খুঁজে বের করার জন্য ওই বাড়িতে ‍পুলিশ তল্লাশি করতে পারে।”

বাসায় পুলিশ এলে ভয় না পেয়ে সহযোগিতা করার বিধান আইনে রয়েছে। এ সময় তল্লাশির নামে যাতে হয়রানি করা না হয় সেজন্য আইনের সুস্পষ্ট বিধান আছে।

বাসায় পুলিশ এলে যদি সন্দেহ হয়, তবে কাছের থানায় ফোন করে নিশ্চিত হতে পারেন। এজন্য যুক্তিসঙ্গত সময় তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলা যেতে পারে। চাইলে স্থানীয় থানায় ফোন করে নিশ্চিত হতে পারেন, আসলেই বাসায় থানা থেকে কোনো পুলিশ পাঠানো হয়েছে কি-না।

ঢাকার বিভিন্ন থানার ফোন নম্বর পেতেhttp://www.dhaka.gov.bd/node/1124329 লিখে ওয়েবসাইটে সার্চ করুন। এখানে ঢাকার সবগুলো থানার ফোন নম্বর আছে।

যেখানেই থাকুন না কেনো, স্থানীয় পুলিশের নম্বরটি আপনার কাছে থাকা জরুরি। সন্দেহজনকভাবে কেউ নিজেকে পুলিশের পরিচয় দিলে তখন তার পরিচয় সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন।

http://bdallinfo.com/dhaka-metropolitan-police-telephone-number/

এই ওয়েবসাইট থেকেও দেশের বিভিন্ন থানার ওসিদের ফোন নম্বর পাওয়া যায়।

পুলিশ, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চাইলে তল্লাশি করতে পারে।

কোর্ট থেকে ম্যাজিস্ট্রেট যদি কারও বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে, তবে পুলিশ উক্ত ব্যক্তি বা বিষয়বস্তুর সন্ধানে তল্লাশি চালাতে পারে। ওয়ারেন্ট হলে তা লিখিত হবে এবং তাতে অভিযোগকারীর নাম থাকবে।

এছাড়া তাতে তল্লাশি বা পরিদর্শনের স্থান বা এর অংশ বিশেষের তথ্য সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে। এছাড়া অভিযোগ কে বা কারা করেছে তা-ও জানা যাবে।

তল্লাশি সম্পর্কিত সাধারণ বিধান

আবদ্ধ স্থানের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি তল্লাশি করতে দিবে:

আবদ্ধ জায়গা বলতে, বসতবাড়ি, গুদামঘর, শয়নকক্ষ ইত্যাদি জায়গা বোঝানো হয়। আইন অনুযায়ী অপরিচিত কেউ হুট করে আরেকজনের শয়নকক্ষে ঢুকতে পারবে না। এজন্য অবশ্যই আগে অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া পুলিশ যদি উক্ত কক্ষে তল্লাশি চালাতে চায় তখন ঘরের মালিক সেখানে উপস্থিত থাকতে পারবেন।

ফৌজদারি কার্যবিধি ১০২ ধারা অনুযায়ী, কোনো ঘর বা বাড়ির মালিক পুলিশকে সার্চ করার অনুমতি দিতে বাধ্য, এ সময় তিনি পুলিশকে সকলপ্রকার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ সুবিধা দেবেন।

তল্লাশি বা অনুসন্ধানের সময় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষীর উপস্থিতিতে পুলিশ ঘরবাড়ি সার্চ করবেন। এছাড়া ১০৩ ধারা অনুযায়ী কোনো আবদ্ধ জায়গায় কিছু পাওয়া গেলে, পুলিশ তা নির্ধারিত ফর্দে তালিকা করে নেবে। তালিকার অতিরিক্ত কিছু নিতে পারবে না। এ সময় উক্ত স্থানের মালিক বা ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি, স্বাক্ষী উক্ত তালিকায় নিজ নিজ স্বাক্ষর করবেন ও একটি কপি পাবেন।

যে বস্তুর খোঁজে পুলিশ তল্লাশি করবেন উক্ত স্থানে বা আশপাশে তল্লাশি করতে পারবেন। কোনো ব্যক্তির দেহে লুকিয়ে আছে বলে সন্দেহ হলে পুলিশ তার দেহ তল্লাশি করতে পারবে।

এইরূপ ব্যক্তি স্ত্রীলোক হলে ৫২ ধারার নির্দেশাবলী অনুসরণ করতে হবে।

৫২ ধারা অনুযায়ী স্ত্রী লোককে অবশ্যই মহিলা পুলিশ দিয়ে তার দেহ তল্লাশি করতে হবে। সেখানে মহিলা পুলিশ না থাকলে স্থানীয় কোনো মহিলা দিয়ে পূর্ণ শালীনতার সঙ্গে তার দেহ তল্লাশি করা যাবে।

সাক্ষীদের উপস্থিতিতে তল্লাশি চালাতে হবে

ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৩ ধারা (১)অনুযায়ী তল্লাশি চালানোর আগে, প্রস্তুত অফিসার বা অন্য কোনো ব্যক্তি যে স্থানে তল্লাশি চালানো হবে সেই এলাকার দুই বা ততোধিক সম্মানিত অধিবাসীকে তল্লাশিতে হাজির থাকা ও সাক্ষী হিসেবে আহ্বান জানাতে হবে।

১০৩ এর ধারা (২) অনুযায়ী সাক্ষীদের উপস্থিতিতে তল্লাশি চালাতে হবে। এসময় উক্ত অফিসার বা অন্য কোনো ব্যক্তি তল্লাশির সময় জব্দকৃত সমস্ত জিনিস এবং যে জায়গায় ওই জিনিসগুলো পাওয়া গেছে, তার একটি তালিকা প্রস্তুত করবেন। সে তালিকায় উক্ত সাক্ষীরা স্বাক্ষর করবেন। বিশেষভাবে সমন জারি করা না হলে, উক্ত স্বাক্ষীদের আদালতে স্বাক্ষী হিসেবে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন হবে না।

তল্লাশিস্থানের দখলদার উপস্থিত থাকতে পারবেন

১০৩ এর ধারা ৩ অনুযায়ী তল্লাশির সময় তল্লাশিস্থানের দখলদার বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তিকে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে তল্লাশির সময় হাজির থাকার অনুমতি দিতে হবে।

১০৩ এর উপধারা ৩ অনুযায়ী তল্লাশি করা কোনো জিনিস আটক গ্রহণ করা হলে আটককৃত বস্তুর তালিকার একটি অনুলিপি সেই স্থানের মালিক বা দখলদার পাওয়ার অধিকার রাখেন।12980_polish

ত্যাজ্যপুত্র ও সম্পত্তির অধিকার

Tejjoputroআমরা একটা বিষয় সচরাচর দেখতে পাই যে, কোন সন্তান পিতার আদেশ না মানলে বা অবাধ্য হলে বা কোন রকম ঝগড়া-বিবাদ হলে পিতা তার সন্তান কে ত্যাজ্য ঘোষনা করে। সাধারনত এই সব ঘোষনা মৌখিক ভাবে হলেও অনেকেই স্ট্যাম্পে লিখে ব নোটারী করে সন্তানকে ত্যাজ্য ঘোষনা করে। সে পরিস্থিতিতে যখন পিতা বা মাতা মৃত্যু বরন করেন, তখন তার নিকটস্থ কিছু আত্মীয় ও এলাকার স্বার্থান্বেষী মহল এমন-ই একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করে যে, যাতে করে সেই ত্যাজ্য সন্তান কোন প্রকার সম্পদ পেতে না পারে। অর্থাৎ মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি মূল মালিকের কাছে না পৌছিয়ে যেন হরি-লুট করে খাওয়া যায়। এটা সম্পুর্ন বেআইনী, নীতি বহির্ভুত ও গর্হিত কাজ। কারন, পিতা-মাতা ও সন্তানের সম্পর্কটা কোন চুক্তি নয় বা বিবাহ, তলাক বা দাস মুক্তির মত নয় যে যেকোন সময় ভেঙ্গে ফেলা যাবে।

রক্তের সম্পর্ক কখনও মুখের কথায় পরিবর্তন বা পরিবর্ধন হয় না। এটা নিতান্তই স্থায়ী বিষয়। তবে একটা বিষয় সর্বদাই গ্রহণযোগ্য, তাহলো কেউ যদি ইচ্ছা করে, তাহলে তার মোট সম্পদ থেকে এক তৃতীয়াংশ যে কোন সময় যে কোন ব্যক্তিকে দান করতে পারবে। এ ব্যাপারে তাকে কেউ বাধা দিতে পারবে না; কিন্তু সেটি নিজের সন্তানদেরকে ত্যাজ্য করে নয়। তাই এই ধরনের ত্যাজ্য যদি কেউ করে, তাহলে সেই ত্যাজ্যের বিষয় ধর্মীয় বা রাষ্ট্রীয় কোন নিয়মেই গ্রহণযোগ্য নয়, কারন এই ধরনে নীতিমালা না ইসলামে আছে, না রাষ্ট্রীয় কাঠামোর কোথাও লিপিবদ্ধ আছে। কিন্তু ত্যাজ্য পুত্র বা কন্যা বলতে কোন আইনগত বিধান না থাকলেও, পিতা মাতা ইচ্ছা করলে তার সমস্ত সম্পত্তি সাফ কবলা রেজিঃ বা দান ইত্যাদি করে, অপর সন্তানকে বঞ্চিত করতে পারেন। তবে সাফ কবলা বা দান লিখিত ও রেজিস্ট্রিকৃত না হলে ত্যাজ্যপুত্র বা ত্যাজ্য কন্যা বললেই বা ঘোষণা করলেই সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হবেনা বা সম্পর্র্ক ছিন্ন হবেনা।

মুসলিম আইনানুসারে, কাউকে ত্যাজ্য-পুত্র করা বা মৃত্যুর সময় অসিয়তের মাধ্যমে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হারাম এবং অবৈধ। শরীয়তের দৃষ্টিতে এটি গ্রহযোগ্য নয়। কাজেই যাকে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষনা করা হয় কিংবা যাকে তার উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করার অসিয়ত করা হয় সে কোন ভাবেই তার উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেনা, বরং সে তার নির্ধারিত অংশ পাবে।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে তার উত্তরাধীকারীকে উত্তরাধিকার (মীরাস) থেকে বঞ্চিত করবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্‌ তাকে তার জান্নাতের উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন। (ইবনে মাজাহ)

অন্যদিকে, হিন্দু আইনেও ত্যাজ্য-পুত্র করবার কোন বিধান নেই। হিন্দু আইনে ”তাজ্য” করে কোন ব্যক্তি তার উত্তরাধিকারীদের সম্পত্তির দাবী থেকে বঞ্চিত করতে পারেনা।

অতএব, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ত্যাজ্যপুত্র বলে কোন বিধান আইনে নেই। তাই কেউ তার সন্তান কে ত্যাজ্য করলেও সে তার উত্তরাধীকার থেকে বঞ্ছিত হবে না।

প্রোতিধের মার্চ একটি টপ সিক্রেট চিঠি পেলাম

, মার্চ ২০, ২০১৪ |

প্রয়াত মাহমুদুর রহমান মজুমদার(স্বাধীনতা-পূর্ব বাংলাদেশে সর্বজ্যেষ্ঠ বাঙালি সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন ব্রিগেডিয়ার মাহমুদুর রহমান মজুমদার। তিনি এ সময় চট্টগ্রামে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সেন্টারের (ইবিআরসি) কমান্ড্যান্ট ছিলেন। ব্রিগেডিয়ার মজুমদার পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থিত সামরিক বাহিনী, ইপিআর, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত বাঙালি সদস্যদের নিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর আক্রমণ করার পরিকল্পনা করেন এবং সেটা অনুমোদনের জন্য কর্নেল ওসমানীর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাছে পাঠান। তিনি ২৫ মার্চ পর্যন্ত তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন। বঙ্গবন্ধুর অনুমোদন না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। ২৭ মার্চ তাঁকে আটক করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। পুরো নয় মাস পাকিস্তানি সেনারা তাঁকে দফায় দফায় পৈশাচিক নির্যাতন করে।
২০১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর ব্রিগেডিয়ার মজুমদার মারা যান। তাঁর নিজ হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি ও রেকর্ড করা বক্তব্য অবলম্বন করে তাঁর জবানীতেই ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চের সেই আক্রমণ পরিকল্পনার কথা তিন কিস্তিতে সংক্ষেপে জানাচ্ছেন লুৎফুল হক। (আজ ছাপা হলো প্রথম কিস্তি)

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ছয় দফা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য ঢাকায় আসেন। শেখ মুজিবের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেন তিনি। ইয়াহিয়া ছয় দফা মেনে নিতে মৌখিকভাবে রাজি হন। করাচি ফেরার পথে ঢাকা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘শেখ মুজিবই পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রী।’

পাঞ্জাব রেজিমেন্টে তথা পশ্চিম পাকিস্তানে আমার দীর্ঘ ১৮ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থেকে এ কথা বিশ্বাস করতে পারলাম না। ভাবলাম, ২৩ বছর ধরে বাঙালিদের ওপর প্রত্যক্ষভাবে আধিপত্যকারী পশ্চিম পাকিস্তানি আমলা ও সেনা কর্মকর্তারা খাঁটি বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফাভিত্তিক একচ্ছত্র শাসন কক্ষনো মেনে নেবে না!

করাচি ফিরে ইয়াহিয়া খান ভুট্টোর আমন্ত্রণে সপারিষদ সিন্ধু প্রদেশের লারকানা শহরে গেলেন। আমার মনে সন্দেহ হলো যে লারকানায় ভুট্টোর রাজকীয় আতিথেয়তার আড়ালে নিশ্চিয়ই বাঙালি ও মুজিববিরোধী কোনো অভিযানের ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

লে. কর্নেল (পরে মেজর জেনারেল) খলিলুর রহমান এ সময় জিএইচকিউ ট্রেনিং উইংয়ে জিএসও-১ ছিলেন। উনি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খুবই আগ্রহী এবং উদ্বিগ্ন ছিলেন। তাঁর সাথে টেলিফোনে প্রায়ই কথাবার্তা হতো। উনি আমাকে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সাধারণত জিএইচকিউতে আসেন না। অথচ লারকানা থেকে ফিরে ইয়াহিয়া খানকে দু-তিন দিন ধরে জিএইচকিউতে দেখতেছি। এখানে জেনারেল হামিদ, পিরজাদা, গুল হাসান এবং ওমরকে নিয়ে রুদ্ধ কামরায় মিটিং করেছেন। নিশ্চয় ওরা কিছু একটা ঘোট পাকাচ্ছে।’

এ অবস্থার মধ্যে একদিন জিএইচকিউ থেকে দীর্ঘ দুই পাতার একটি টপ সিক্রেট চিঠি পেলাম। চিঠি পড়ে মর্মাহত হলাম। চিঠিতে লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগের ছয় দফার ভিত্তিতে প্রতিরক্ষা বাহিনীতে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব মেনে নিলে বাঙালির প্রাধান্যে এটি একটি তৃতীয় শ্রেণীর সেনাবাহিনীতে পরিণত হবে। বিস্তৃতভাবে এসব কথা বর্ণনার পর উপসংহারে লেখা হয়েছে, এমতাবস্থায় শেখ মুজিবকে কিছুতেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে দেওয়া যায় না।

তাহলে আমরা আর পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে থাকব না, আমরা স্বাধীন হব। প্রয়োজনে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনব—এ ছিল আমার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। আমার একান্ত বিশ্বস্ত চিফ ইন্সট্রাক্টর লে. কর্নেল মুজিবর রহমান চৌধুরীকে আমার অফিসে ডেকে পাঠালাম। তাকে চিঠি পড়তে দিলাম। এ নিয়ে দুজনে আলোচনা করলাম। ঠিক হলো, কর্নেল (অব.) এম এ জি ওসমানীর মাধ্যমে শেখ মুজিবকে যথাশিগগির বিষয়টি অবহিত করতে হবে।

ওসমানী সাহেবকে টেলিফোনে সিলেটি ভাষায় কিছু ইঙ্গিত দিয়ে যত শিগগির সম্ভব চট্টগ্রাম শহরে লে. কর্নেল রবের বাসায় গোপনে আসতে বলি। পূর্ব পাকিস্তানে তখন পূর্ব পাকিস্তানি ও পশ্চিম পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর শক্তি ও অবস্থানের মৌখিক হিসাব কষতে বসলাম আমরা। দেখা গেল, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর, পুলিশ, আনসার মিলে তাৎক্ষণিক স্ট্রাইকিং ফোর্স পশ্চিম পাকিস্তানিদের চেয়ে আমাদের সাত-আট গুণ বেশি। অতএব, স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার জন্য অবিলম্বে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।

দুই দিন পর ওসমানী সাহেব এলেন। তাঁকে আমি জিএইচকিউ থেকে পাওয়া টপ সিক্রেট চিঠির বিষয়বস্তু জানালাম। বললাম, ইয়াহিয়া, মুজিব, ভুট্টো বৈঠক ও কাঁদা ছোড়াছুড়ি করে একে অন্যকে খেপিয়ে সংসদ অধিবেশন বিলম্বিত করার আড়ালে বাঙালিদের সামরিক বাহিনী দিয়ে দমন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে জিএইচকিউ। পশ্চিম পকিস্তান থেকে রিইনফোর্সমেন্ট আনার আগেই অকস্মাৎ আমাদের আক্রমণ করতে হবে।

ওসমানী সাহেব আমাকে সতর্ক করে দিয়ে বললেন, ‘আমি ঢাকায় ফিরে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে টপ সিক্রেট চিঠি ও জিএইচকিউর ডিসিশন সম্বন্ধে বিস্তারিত জানাব। সাবধান! বঙ্গবন্ধুর সরাসরি নির্দেশ বা ইঙ্গিত ছাড়া কোনো সামরিক অভিযানে মোটেই যাবেন না।’ আমি তাঁকে বললাম, ‘আপনি শেখ সাহেবকে ভালো করে বোঝাবেন। এ-ও বলবেন যে পাকিস্তানের ব্যাপারে আর্মির ডিসিশনই সব সময় ফাইনাল হয়। আমি মনে করি, আর অপেক্ষা না করে আমাদের অ্যাকশনে যাওয়া উচিত।’ উনি বললেন, ‘ঠিক আছে, আমি গিয়ে বুঝায়ে বলব। তারপর আপনাকে জানাব।’

আমি ওনাকে বললাম, ‘আমি আপনাকে রিটায়ার্ড বেঙ্গলি পারসনের বয়স অনুযায়ী ঠিকানা দিয়ে লিস্ট পাঠাব। আপনি সেই লিস্ট অনুযায়ী তাদের ডেকে সতর্ক করে দিয়ে বলবেন, যখনই প্রয়োজন হবে তাদের ডাকা হবে। ডাকার সঙ্গে সঙ্গে তারা সবাই চট্টগ্রাম সেন্টারে রিপোর্ট করবে।’ উনি বললেন, ‘ঠিক আছে, পাঠিয়ে দেবেন।’

আমার খুব ইচ্ছা ছিল যে আমি টপ সিক্রেট চিঠিটা ওসমানী সাহেবকে দেখাব। কিন্তু উনি আসার আগে আমাকে খবর দিয়ে আসেন নাই। আসছেন গোপনে। রাতে। অফিস বন্ধ থাকায় কেবিনেট থেকে চিঠিটা আনতে পারলাম না।

উনি চলে যাওয়ার পরে আমি কর্নেল চৌধুরীকে ডেকে বললাম, ‘তাড়াতাড়ি রেকর্ড অফিস থেকে বাঙালি সৈনিকদের লিস্টটা বের করেন। যাদের বয়স ৫০ বছর বা ৫২ বছর পর্যন্ত, তাদের ঠিকানাসহ একটা লিস্ট করেন।’

ওসমানী সাহেবের সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ হতো। ওনাকে আমি সব সময় বলতাম—আর দেরি করবেন না, আর দেরি করবেন না।

কর্নেল চৌধুরী লিস্ট রেডি করলেন। লিস্টটা অনেক বড় হয়ে গেছে, প্রায় ২৫০০ সৈনিক।

আমি ক্যাপ্টেন আমিন আহাম্মদ চৌধুরীকে ডাকলাম এবং বললাম, ‘এই লিস্ট নিয়ে তুমি ঢাকায় কর্নেল ওসমানীর কাছে যাবে।’ চট্টগ্রামের এসপি শামসুল হককে টেলিফোন করে বললাম, ‘আমাকে একটা সিভিল গাড়ি দিতে হবে। গাড়িটা ঢাকা যাবে, আবার নিয়ে আসবে।’ শামসুল হক গাড়ি দিল। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে আমিনকে দিয়ে লিস্ট পাঠালাম। আমিনকে বললাম, লিস্টটা সরাসরি ওসমানী সাহেবের হাতে দিবা।

সাইবার ক্রাইম রোধে আইন আছে

 

দেশ প্রযুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে অপরাধের মাত্রাও যোগ হচ্ছে। একসময় গ্রামে ছিল ঢাল, সড়কি প্রধান অস্ত্র। এখন সেখানে রাইফেল, বন্দুক, পিস্তলের আবির্ভাব ঘটেছে। এখানেই শেষ নয়, অপরাধও হয়ে উঠেছে প্রযুক্তিময়। বিভিন্ন সময় ইন্টারনেটে নানা ধরনের জঙ্গি সংগঠনের হুমকি আমাদের নজরে আসে। এ ছাড়াও মেইলে হরেক রকম লোভনীয় আহ্বানে পড়ে ও ভুয়া মেইলের মাধ্যমে প্রতারিত হয়ে থাকেন অনেকেই।
সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এম মাসুম বিল্লাহর একটি মেইল পেয়েছি। বিষয়বস্তু এ রকম_তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় মানবাধিকার বিষয়ে একটি সম্মেলনে যোগ দিতে গেছেন। সেখানে তাঁর মোবাইল, ব্যাগ, টাকা-পয়সা সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব। এখন লাখ টাকা পাঠানো খুব জরুরি। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাঁর কয়েকজন নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করি। তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। অবশেষে মাসুম বিল্লাহ জানালেন তাঁর ওয়েবসাইট হ্যাকিং হয়ে গেছে।
শুধু ই-মেইলে নয়, মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অথবা মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে অপরাধপ্রবণতার হারও বেড়ে গেছে। যা সাইবার ক্রাইম হিসেবে পরিচিত। এনসাইক্লোপিডিয়া অনুযায়ী ঈুনবৎ পৎরসব বলতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে অপরাধ করা হয়, তাকেই বোঝানো হয়েছে।
বাংলাদেশে সাইবার ক্রাইমের পরিচিতি বা এ সংক্রান্ত অপরাধ দমনের জন্য সংশ্লিষ্ট আইনটি অনেকেরই জানা নেই। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ আমাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়। এই আইনে ইন্টারনেট অর্থ এমন একটি আন্তর্জাতিক কম্পিউটার নেটওয়ার্ক যার মাধ্যমে কম্পিউটার, সেলুলার ফোন বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহারকারীরা বিশ্বব্যাপী একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ ও তথ্যের আদান-প্রদান এবং ওয়েবসাইটে উপস্থাপিত তথ্য অবলোকন করতে পারে।
তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৫৬ ধারায় বলা হয়েছে, (১) যদি কোনো ব্যক্তি জনসাধারণের বা কোনো ব্যক্তির ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বা ক্ষতি হবে মর্মে জানা সত্ত্বেও এমন কোনো কাজ করেন, যার ফলে কোনো কম্পিউটার রিসোর্সের কোনো তথ্যবিনাশ, বাতিল বা পরিবর্তিত হয় বা তার মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাস পায় বা অন্য কোনোভাবে একে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
(২) এমন কোনো কম্পিউটার সার্ভার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করার মাধ্যমে এর ক্ষতিসাধন করেন যাতে তিনি মালিক বা দখলদার নন, তাহলে তাঁর এই কাজ হবে একটি হ্যাকিং অপরাধ। কোনো ব্যক্তি হ্যাকিং অপরাধ করলে তিনি অনূর্ধ্ব ১০ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন বা উভয়দণ্ড দেওয়া যেতে পারে।
তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে বা যার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তাহলে তার এই কাজ অপরাধ বলে গণ্য হবে। কোনো ব্যক্তি এ ধরনের অপরাধ করলে তিনি অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৬৮ ধারায় বলা হয়েছে, সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের দ্রুত ও কার্যকর বিচারের উদ্দেশে এক বা একাধিক সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে।
গঠিত সাইবার ট্রাইব্যুনালে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে সরকার একজন দায়রা জজ বা একজন অতিরিক্ত দায়রা জজকে মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেবে। অনুরূপভাবে নিযুক্ত একজন বিচারক নিয়ে এই ট্রাইব্যুনাল ‘সাইবার ট্রাইব্যুনাল’ নামে অভিহিত হবে। এই ধারার অধীন গঠিত সাইবার ট্রাইব্যুনালকে পুরো বাংলাদেশের স্থানীয় অধিক্ষেত্র অথবা এক বা একাধিক দায়রা অধিক্ষেত্র প্রদান করা যেতে পারে। ট্রাইব্যুনাল তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর আইনের অধীন অপরাধের বিচার করবেন।
৭৪ ধারায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, এতদুদ্দেশ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন না হওয়া পর্যন্ত এই আইনের অধীন অপরাধ দায়রা আদালত কর্তৃক বিচার্য হবে।
সরকার সরকারি গেজেট, প্রজ্ঞাপন দ্বারা এক বা একাধিক সাইবার আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারে। সাইবার আপিল ট্রাইব্যুনাল অধীন সাইবার ট্রাইব্যুনাল বা দায়রা আদালত কর্তৃক ঘোষিত রায় বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল শুনবে ও নিষ্পত্তি করবে।
কেউ সাইবার ক্রাইম করলে কোথায় মামলা করতে হবে বা আদৌ মামলা করা যাবে কি না এ বিষয়ে জনগণ এখনো সচেতন নয়। তা ছাড়া বিদ্যমান আইন শুধু সাইবার ক্রাইম ছাড়া অন্যান্য প্রযুক্তিসংক্রান্তু অপরাধের সংজ্ঞা এবং শাস্তির বিধান করেছে। সুতরাং জনগণের এই আইনের সম্যক ধারণা থাকা একান্ত জরুরি।

টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য কোরাম সংকটেই অপচয় শত কোটি টাকা

অঅ-অ+
নবম জাতীয় সংসদে শুধু কোরাম সংকটে সময় অপচয়ের কারণে ১০৪ কোটি টাকারও বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আর বিরোধী দলের সংসদ বর্জনে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। সংসদের প্রধান কাজের মধ্যে অন্যতম আইন প্রণয়নে অংশ নিয়েছেন মাত্র ৫৩ জন। একটি আইন বা বিল পাস করতে সময় ব্যয় হয়েছে মাত্র ১২ মিনিট। সংসদে রাজনীতিবিদ ও আইনজীবীদের প্রতিনিধিত্ব দিন দিন কমছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব দিন দিন বেড়ে শতকরা ৫৭ ভাগে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইবির ‘পার্লামেন্ট ওয়াচ’ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিরোধী দলের সংসদ বর্জনের হার ক্রমাগত বেড়ে নবম সংসদে ৮১ দশমিক ৫৮ ভাগ কার্যদিবসে এসে দাঁড়িয়েছে। অষ্টম সংসদে এই হার ছিল ৬০ ভাগ। সংসদ বর্জনের এ সংস্কৃতি বিশ্বে অদ্বিতীয়। এটি যেমন বিব্রতকর তেমনি জনগণের ভোট ও রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাহীনতার পরিচায়ক।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির দুই ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোরশেদা আক্তার ও ফাতেমা আফরোজ এবং প্রোগ্রাম ম্যানেজার জুলিয়েট রোজেটি। উপস্থিত ছিলেন টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এম হাফিজউদ্দিন খান ও নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানসহ কর্মকর্তারা।
কোরাম সংকট : নবম সংসদে মোট ১৯টি অধিবেশনে ৪১৮ কার্যদিবসে কোরাম সংকটে সময় অপচয় হয়েছে ২২২ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট। নির্ধারিত সময়ে অধিবেশন শুরু ও নামাজের বিরতি দিয়ে আবার শুরু করতে গড়ে প্রতিটি কার্যদিবসে সময় অপচয় হয়েছে ৩২ মিনিট করে। প্রাক্কলিত হিসাব অনুযায়ী সংসদ পরিচালনা করতে প্রতি মিনিটে গড়ে খরচ হয় প্রায় ৭৮ হাজার টাকা। ফলে কোরাম সংকটের কারণে প্রতি কার্যদিবসে অপচয় হওয়া সময়ের অর্থমূল্য প্রায় ১০৪ কোটি ১৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।
অন্যদিকে সংসদ সদস্যদের উপস্থিতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, সংসদ অধিবেশনে প্রতিদিন গড়ে উপস্থিত থেকেছেন ২২১ জন সদস্য, যার হার শতকরা ৬৩ ভাগ। ৪১ ভাগ সদস্য ৭৫ ভাগের বেশি এবং ১৪ ভাগ সদস্য চার ভাগের এক ভাগের কম কার্যদিবসে উপস্থিত ছিলেন। বিরোধী দলের নেতা হিসেবে খালেদা জিয়া ৪১৮ কার্যদিবসের মাত্র ১২ কার্যদিবস এবং অষ্টম সংসদে তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা ৩৭৩ কার্যদিবসের মধ্যে ৪৫ দিন উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রীদের মধ্যে ৩২ দশমিক ৭ ভাগ তিন-চতুর্থাংশের বেশি, ৫৩ দশমিক এক ভাগ অর্ধেকের বেশি এবং ১৪ দশমিক ৩ ভাগ মন্ত্রী অর্ধেকের কম কার্যদিবসে উপস্থিত ছিলেন।
সংসদ সদস্যদের পেশার ধরন : সংসদে আইনজীবী ও রাজনীতিকদের প্রতিনিধিত্ব দিন দিন কমে বাড়ছে ব্যবসায়ীদের সংখ্যা। টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক সময় সংসদে আইনজীবীদের শতকরা হার বেশি থাকলেও দিন দিন তা কমে আসছে। বাড়ছে ব্যবসায়ীদের হার। বর্তমানে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে ব্যবসায়ীদের হার বেড়ে শতকরা ৫৭ ভাগে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে আইনজীবীদের ১৪ এবং রাজনীতিবিদ, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের হার শতকরা ৭ ভাগে নেমে এসেছে।
ওয়াক আউট : নবম জাতীয় সংসদে ৩৮টি কার্যদিবসে বিভিন্ন দাবিদাওয়া ও প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ৫৪ বার ওয়াক আউটের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে প্রধান বিরোধী দল ওয়াক আউট করেছে ৪১ বার আর স্বতন্ত্র সদস্য ফজলুল আজিম করেছেন একাই ১৩ বার। রাষ্ট্রপতির ভাষণ, মন্ত্রীসহ সরকারদলীয় সদস্যদের বক্তব্য ও অসৌজন্যমূলক আচরণ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন, সংসদ কক্ষে আসন বিন্যাস, বিল পাস ও পাসের সময় চাহিদা অনুযায়ী সময় বরাদ্দ না পাওয়া, পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলার সুযোগ না দেওয়া ইত্যাদির প্রতিবাদে এসব ওয়াক আউট হয়েছে।
আইন প্রণয়নে কম সময় ব্যয় : আইন প্রণয়ন জাতীয় সংসদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হলেও এই কাজে সময় ব্যয় হয়েছে কম সময়। নবম জাতীয় সংসদে একটি বিল পাস করতে সময় নেওয়া হয়েছে গড়ে ১২ মিনিট। টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের লোকসভায় যেখানে শতকরা ৬০ ভাগ বিল পাসের ক্ষেত্রে আলোচনা হয় এক থেকে দুই ঘণ্টা। বাংলাদেশে নবম সংসদে মোট সময়ের মাত্র ৮ দশমিক ২ ভাগ সময় ব্যয় করা হয়েছে আইন প্রণয়নে। ১৮ মিনিটে দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) বিল-২০১১, প্রায় ৫ মিনিটে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী দ্রুত বিচার (সংশোধন) বিল-২০১০, ১০ মিনিটে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) বিল-২০১১ এবং উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) বিল-২০১১, ৩ মিনিটে তথ্য অধিকার বিল-২০০৯, ১৫ মিনিটে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) বিল-২০১০, ১১ মিনিটে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিল-২০০৯ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) বিল-২০১৩ পাস করা হয় ৪ মিনিটে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে (নবম) আইন প্রণয়নে মোট সময়ের মাত্র ৮ দশমিক ২ ভাগ সময় ব্যয় করা হয়েছে। অথচ যুক্তরাজ্যে ৫৫ ভাগ (২০০৯-১০) এবং ভারতে ৫৩ ভাগ সময় ব্যয় করা হয়। নবম সংসদে ২৭১টি বিল পাস করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৬৮টি সরকারি ও ৩টি বেসরকারি। সময় ব্যয় হয়েছে ১০৯ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট। ১৫ জন সংসদ সদস্য বিল উত্থাপন করেছেন এবং ৫৩ জন আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
বেশি সময় ব্যয় বাজেট আলোচনায় : নবম জাতীয় সংসদে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় হয়েছে বাজেট আলোচনায়। পাঁচটি বাজেট অধিবেশনের মোট সময়ের ২১ দশমিক ৮ ভাগ ব্যয় হয়েছে এতে। মোট ২৮৯ ঘণ্টা ৫৭ মিনিট আলোচনায় অংশ নিয়েছেন ৩১৮ জন সদস্য। শেষ বাজেট অধিবেশনে বিরোধীদলীয় জোটের ৩৩ জন সদস্য আলোচনায় অংশ নেন। ৩২ জন সদস্য কোনো বাজেট আলোচনায়ই অংশ নেননি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আলোচনায় অংশগ্রহণকারী সদস্যরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাজেট সম্পর্কিত আলোচনার বাইরে দলীয় প্রশংসা, প্রতিপক্ষ দলের সমলোচনা এবং অপ্রাসঙ্গিক বিষয় তুলে আনেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণ : নবম সংসদে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সময় ব্যয় হয়েছে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায়। এই হার মোট সময়ের শতকরা ১৬ দশমিক ৫ ভাগ। ২৯৯ জন সদস্য কোনো কোনো অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। ৭৮ জন সদস্য পাঁচটি অধিবেশনেই রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নেন আর ৫১ জন কোনো অধিবেশনেই অংশ নেননি। আলোচনায় নিজ দলের প্রশংসা, প্রতিপক্ষ দলের সমালোচনা এবং অসংসদীয় ভাষায় প্রয়াত রাষ্ট্রনেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন। বক্তব্যে থাকে এক দল আরেক দলকে আক্রমণ ও অসংসদীয় আচরণ।
স্পিকারের ভূমিকা : টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংসদে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার উভয়ই সরকারদলীয় হওয়ায় সংসদ পরিচালনার ক্ষেত্রে দলীয় প্রভাবমুক্ত থাকতে পারেন না। বিরোধী দলের সদস্যদের কটাক্ষ করে সরকারদলীয় সদস্যদের বক্তব্য দিলে স্পিকারকে অনেক সময় নীরব থাকতে দেখা যায়।  তবে সদস্যদের অসংসদীয় ও অশালীন ভাষা ব্যবহার বন্ধে স্পিকারের রুলিং এবং দলমত-নির্বিশেষে সব সদস্যের প্রতি আন্তরিক সহযোগিতা ও সহনশীল আচরণ এবং আহ্বান ইতিবাচক পদক্ষেপ। নবম সংসদে স্পিকার ৭১২ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট, ডেপুটি স্পিকার ১৫২ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট এবং সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ১০৬ ঘণ্টা ১৪ মিনিট অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেছেন।
ইতিবাচক দিক : অষ্টম জাতীয় সংসদের তুলনায় নবম সংসদে সদস্যদের উপস্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ ভাগে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও সরকারদলীয় সদস্যদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ ছিল। বাজেট আলোচনায় খাতভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ, সংশোধনী প্রস্তাব, নতুন পরিকল্পনা, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থতার সমালোচনা ছিল ইতিবাচক পদক্ষেপ। প্রশ্নোত্তর, জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশ ইত্যাদি পর্বে নারী সদস্যদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য।
নেতিবাচক দিক : নবম সংসদে বিরোধী দলের সংসদ বর্জন ও এর মাত্রা সংকটজনকভাবে বৃদ্ধি পায়। ফলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব ও সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। অষ্টম সংসদের তুলনায় নবম সংসদে আইন পাসে কম সময় ব্যয় করা হয় এবং কমসংখ্যক সদস্য অংশ নেন। সংবিধানে স্পষ্ট থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক চুক্তি নিয়ে সংসদে আলোচনা করা হয়নি। সংসদে অসংসদীয় ভাষার ব্যবহার, সংসদ অধিবেশন ও কমিটির বৈঠকে কোরাম সংকট একটি নেতিবাচক দিক ছিল। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে মত প্রকাশে প্রতিবন্ধকতা, যা নবম সংসদেও ছিল। মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোয় মন্ত্রীরা সদস্য ছিলেন, যা কার্যপ্রণালী বিধির ১৮৮ (২)-এর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। সরকারি দল নির্বাচনী ইশতেহারে সদস্যদের আচরণ বিধিমালা প্রণয়ন, রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে শিষ্টাচার ও সহিষ্ণুতা গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু ইতিবাচক পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বিরোধী দলের মধ্য থেকে একজন ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন এবং স্পিকারের দল থেকে পদত্যাগের আলোচনা করলেও সরকার তা বাস্তবায়ন করেনি।
টিআইবির ২২ জন কর্মকর্তা এই গবেষণায় অংশ নেন। ট্রাস্টি বোর্ডের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। প্রতিবেদন তৈরিতে সংসদ টেলিভিশন, জাতীয় সংসদের বুলেটিন, সরকারি গেজেট, প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন ও বই এবং সংবাদপত্রের সহযোগিতা নেওয়া হয় বলে জানানো হয়েছে।

 

স্থানীয় সরকার আইন পরিবর্তন হচ্ছে! দলীয় ভাবে স্থানীয় নিরবাচন করার জন্য আইনের পরিবর্তন করা হচ্ছে

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইনে পরিবর্তন আসছে। এই নির্বাচন নির্দলীয় না রেখে দলীয় ভিত্তিতে করার জন্য আইনে পরিবর্তন আনার চিন্তা করছে বাংলাদেশের সরকার। তবে এ নিয়ে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে রয়েছে ভিন্নমত৷ বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছাড়া সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে হয়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে যে, আইনে নির্দলীয় হলেও বাস্তবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হচ্ছে দলীয় মনোনয়নের মাধ্যমে। একমাত্র প্রতীক ছাড়া আর সব কিছুই হচ্ছে দলীয় ভিত্তিতে। এছাড়া এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিষয়টি হচ্ছে একদম প্রকাশ্যে। দলগুলো প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়ার পাশাপাশি নির্বাচনে তাঁদের দলের কতজন জয়ী হলো, তাও প্রকাশ করছে। নির্দলীয় নির্বাচনের এই দলীয় আচরণ নিয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো কথাও বলছে না।
এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সোমবার ঢাকার বাইরে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমানের সময় স্থানীয় নির্বাচন নির্দলীয় করার আইন হয়েছে। এ আইনে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। স্থানীয় সব নির্বাচন ভবিষ্যতে দলীয়ভাবে হতে হবে।’
এর আগে গত ৩ মার্চ স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশাফুল ইসলাম জানান, স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করার জন্য আইনে পরিবর্তন আনা হবে। জানা গেছে, দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য আইন পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আইনটি পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর সংশোধন করে দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার জন্য সংশোধনের খসড়া উপস্থাপন করা হবে। আইন মন্ত্রণালয় এ ব্যাপরে প্রয়োজনীয় কাজ করছে।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ আহমেদ বলেন, ‘এখন প্রতীক ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সব কিছুই দলীয় ভিত্তিতে হচ্ছে। তাই পুরোটা দলীয়ভাবে হতে পারে। কিন্তু এ জন্য শুধু দলীয় প্রতীক ব্যবহারের বিধান করাই যথেষ্ঠ নয়। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘এখন স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় কোনো দলের মেয়র বা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেই পুরোটা তাদের দখলে চলে যায়। কিন্তু কাউন্সিল ব্যবস্থার প্রবর্তন করলে সব দলেরই প্রতিনিধিত্ব থাকবে। আর তা না করা হলে দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইন করে কোনো লাভ নেই।’
এছাড়া জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ বা জানিপপ-এর চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, ‘দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়বদ্ধতার মধ্যে আনা যাবে। নির্বাচনে সহিংসতা বা অবৈধ কিছু হলে তাদের প্রশ্ন করা যাবে। এখন আইন না থাকার কারণে প্রতীক ছাড়া সব কিছু দলীয়ভাবে হলেও কোনো ঘটনা ঘটলে তারা স্থানীয় সরকারের নির্বাচন বলে দায় এড়িয়ে যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘এছাড়া দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন হলে জাতীয় নেতারা স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি এবং তা বাস্তবায়নের আওতায় আসবেন।’ ।ডচভেলে।

ভূমি অফিস থেকে খতিয়ান পাবেন কীভাবে

1520700_543494415741878_941575980_n

খতিয়ান বা খতিয়ানের নকল (কপি) পাওয়ার জন্য নিজ জেলার রেকর্ড রুমের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে আবেদন করতে হয়। ভূমি জরিপের সময় খতিয়ান ১ নম্বর রেজিস্টার আকারে বাঁধাই করা ছাড়াও মূল খতিয়ানের অনেক কপি ছাপানো হয়। আবার বিক্রির জন্য রেকর্ড রুমেও পাঠানো হয়। এই খতিয়ান বিক্রয় খতিয়ান হিসেবে পরিচিতি।

জরিপের পর অনেক দিন হয়ে গেলে আর এই খতিয়ান পাওয়া যায় না। তবে জেলা রেকর্ড রুম থেকে খতিয়ান বা খতিয়ানের নকল দেয়ার নিয়ম আছে।

একমাত্র সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিস মিউটেশন খতিয়ান দিতে পারে। যদিও তহসিল অফিস কিংবা উপজেলা ভূমি অফিসে রেকর্ড থাকে তবুও তারা নকল দেয়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত না। কিন্তু কোনো কোনো সময় দেখা যায় আপনি যে খতিয়ানের নকল চাচ্ছেন তা জেলা রেকর্ড রুমে নেই।

তহসিল বা উপজেলা ভূমি অফিসে আছে। তখন রেকর্ড রুমে আবেদন করলে এবং আবেদনে লিখে দিলে তহসিল বা উপজেলা ভূমি অফিস থেকে একটি খসড়া চেয়ে পাঠায় বা নথিটি চেয়ে পাঠায়। তা থেকে নকল তৈরি করে। এই প্রক্রিয়ায় অনেক দেরি হয়।

তবে আজকাল উপজেলা ভূমি অফিস থেকে নকল দিতে দেখা যায়। কিন্তু দেওয়ানি আদালত এই নকল গ্রহণ করে না। তাই জেলা রেকর্ড রুম হতে নকল তুলতে হয়।

একটি আবেদনে একাধিক মৌজার নকল পাওয়া যায় না। একটি আবেদনে একাধিক জরিপেরও নকল পাওয়া যায় না। এক আবেদনে চারটির বেশি খতিয়ানের নকল পাওয়া যায় না। নকল পাওয়ার জন্য আবেদনের সাথে সাথে ৫ টাকার কোর্ট ফি দিতে হয়।

সাধারণ আবেদনে ৭২ ঘণ্টা পর নকল পাওয়ার কথা কিন্তু বাস্তবে অনেক দেরি হয়। ১০ টাকার কোর্ট ফি দিয়ে জরুরি পাওয়ার আবেদন করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাওয়ার কথা।

ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে আরএস খতিয়ান সংরক্ষণ করা হচ্ছে, কিন্তু এসএ খতিয়ানও আছে। এই অধিদপ্তর থেকে খতিয়ান তৈরির চূড়ান্ত প্রকাশনা স্তরে দুই মাস যাবৎ খতিয়ানের নকল নেয়া যায়।

নিঃস্ব এক প্রধানমন্ত্রী

১৭ মার্চ ২০১৪, সোমবার,

\

বলছি একজন প্রধানমন্ত্রীর কথা। তার বয়স ৭৫ বছর। নেই নিজস্ব কোন জমিজমা, বাড়িঘর। নেই ব্যাংকে কোন অর্থ। এমন কি একটি ব্যাংক একাউন্টও নেই তার। বিয়ে করেন নি। কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা কোন কোম্পানিতে তার নেই কোন বিনিয়োগ। জীবনের সবটা সময় একা একা কাটিয়ে দিচ্ছেন। সম্পদ বলতে আছে মাত্র তিনটি মোবাইলফোন। অনেকেই বিস্মিত হতে পারেন এ খবরে। কিন্তু ঘটনা সত্য। তিনি হলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা। অভিজাত কৈরালা পরিবারের সন্তান। একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার মাত্র তিনটি মোবাইলফোন থাকায় তাকে বলা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে গরিব প্রধানমন্ত্রী। এ কথা প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। তিনি জনগণের কাছে প্রকাশের জন্য সহায় সম্পত্তির বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। তবে তা এখনও সরকারিভাবে প্রকাশ করা হয় নি। প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা দেয়া হবে। তবে শুক্রবার
তার এক সহকারী প্রধানমন্ত্রীর সম্পদের ওই বিবরণ দিয়েছেন একটি সংবাদ সংস্থার কাছে। তাতে সুশীল কৈরালা দেখিয়েছেন তার স্থাবর বা অস্থাবর বলতে কোন সম্পদ নেই। সারা জীবনে তিনি কোন অর্থ জমা করেন নি। এ জন্য তাকে নেপালের রাজনীতিতে ‘সন্ন্যাসী’ হিসেবে ডাকা হয়। তার জীবনধারায় সরলতা একজন সাধারণ মানুষের জীবনকেও হার মানায়। গত মাসে ৭৫ বছর বয়সে তাকে নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করা হয়। ফলে প্রধানমন্ত্রী পদে তার দায়িত্ব পালনের এক মাস পূর্ণ হয়েছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি বেতন পান নি। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সমন্বয়কারী প্রকাশ অধিকারী বলেছেন, যখন তিনি বেতন গ্রহণ করবেন তখন আমরা তার নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলবো। তিনিই মিডিয়ার কাছে প্রধানমন্ত্রীর সম্পদের দুর্দশা প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর তিনটি মোবাইলফোনের মধ্যে একটি সর্বশেষ ভার্সনের আইফোন, দুটি অতি সাধারণ মোবাইল ফোন সেট। এর মধ্যে আবার একটি মোবাইল নষ্ট। কোন কাজ করে না সেটি। এর বাইরে তার কোন সম্পদ নেই। তিনি এর আগে কখনও সরকারি দায়িত্ব পালন করেন নি। বসবাস করেন কাঠমান্ডুতে একটি ভাড়া বাসায়। এ বাড়িটির ভাড়া পরিশোধ করে তার দল নেপালি কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি একটি গাড়ি ব্যবহার করতেন। এটি দিয়েছেন দলের এক শুভাকাঙক্ষী। প্রধানমন্ত্রীর অফিসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, তিনি প্রথম যখন প্রধানমন্ত্রীর সম্পদের তালিকা হাতে পান তখন বিস্মিত হয়েছেন। বলেছেন, আমি বিশ্বাসই করতে পারি নি। তার এক সহকারীর সঙ্গে যখন ওই তালিকা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিলাম তখন হতাশ হয়েছি। আমি দেখলাম তার দেয়া তথ্য সঠিক। শেষ পর্যন্ত মেনে নিলাম যে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী একেবারে সাধারণ মানুষ। সুশীল কৈরালার বাড়ি পশ্চিম নেপালের ব্যাংকি জেলায়। সেখানে তার ভাইয়েরা ও আত্মীয়রা বসবাস করেন। সেখানে রয়েছেন তার ৬ ভাই। তাদের রয়েছে বিপুল ভূ-সম্পত্তি। যখন ভাইদের মধ্যে সম্পদ ভাগাভাগি হয় তখন তিনি তা নিতে রাজি হন নি। প্রকাশ অধিকারী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সম্পদের তালিকা হাতে পাওয়ার পর তার এক সহযোগী তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে, তার অন্য কোন সম্পত্তি আছে কিনা যা এই তালিকার সঙ্গে যোগ করা যায়। জবাবে সুশীল কৈরালা বলেন, না। আমার আর কোন সম্পত্তি নেই। তবে সম্পদ বলতে আমার যা আছে তা হলো তিনটি মোবাইলফোন। তিনি ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই মন্ত্রিপরিষদের সবাইকে তাদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা রক্ষা, নীতিপরায়ণ হতে ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতি গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছেন। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হলো বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন। তিনি এতে যোগ দেন একটি ছোট্ট দল নিয়ে। সুশীল কৈরালা পরেন একটি সাধারণ ঘড়ি ও স্বর্ণের আংটি। প্রকাশ অধিকারী বলেন, তিনি নিশ্চিত নন যে, প্রধানমন্ত্রীর হাতের আংটিটি খাঁটি স্বর্ণের কিনা। এ জন্যই হয়তো তা তিনি সম্পদ বিবরণীতে দেখান নি। নেপালের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯২ অনুসারে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ, রাষ্ট্রদূত, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অন্য যারা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন উত্তোলন করেন তাদের সবাইকে সম্পদের পূর্ণ বিবরণী প্রকাশ করতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখ থাকতে হবে বাড়ি, জমি, গাড়ি, শেয়ার, ব্যাংক একাউন্ট, নগদ অর্থ, স্বর্ণ ও রুপার অলংকার। নেপালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পর তখনকার প্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণ প্রসাদ ভট্টরাইও বেছে নেন একেবারে সাধারণ জীবন। তিনি হিমালয় দুহিতা নেপালে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে গেছেন সারা জীবন। তিনিও বাস করতেন একটি ভাড়া করা কক্ষে। তার সম্পদ বলতে ছিল, একটি ছাতা, কাদামাটির তৈরি একটি পানির পাত্র ও এলুমিনিয়ামের একটি বাক্স।

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে অগ্নিসংযোগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দায়মুক্তি দিয়ে চার্জশিট

| ১৭ মার্চ ২০১৪, সোমবার,

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে যারাই অগ্নিসংযোগ করুক তাদের রেহাই নেই- অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ। তার চোখের জল বৃথা প্রমাণ করে রেহাই পেতে যাচ্ছেন সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে অগ্নিসংযোগকারীরা। ভিডিও ফুটেজে সন্দিগ্ধদের চেনা গেলেও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাদের বাঁচানোর আয়োজন সম্পন্ন করেছে। গত ৩১শে অক্টোবর অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে  সিআইডি সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (আমলী আদালত ৩)-এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। দেড় বছর তদন্তের পরও অগ্নিসংযোগকারীদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২০১২ সালের ১৩ই জুলাই শাহপরান থানায় ছাত্রাবাসের ১ম, ২য় ও ৪র্থ ব্লকের তত্ত্বাবধায়ক বশির আহমদের দায়ের করা মামলার প্রতিবেদনে ১১ জনকে সন্দিগ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করলেও ‘প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী প্রমাণ’ না পাওয়ায় কাউকেই অভিযুক্ত করা হয়নি। পরে সন্দিগ্ধদের বিরুদ্ধে কোন তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত  করার আশা পোষণ করে তদন্তের আপাত মৃত্যু ঘোষণা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনার মাধ্যমে সিআইডি যে ১১ জনকে সন্দিগ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এরা সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। এরা হলেন  দেবাংশু দাস মিঠু, পংকজ পুরকায়স্থ, আবু সরকার, জাহাঙ্গীর আলম, মৃদুলকান্তি সরকার, কামরুল ইসলাম, এডভোকেট আলমগীর, বাবলা, আতিক, রুবেল জ্যোতির্ময় দাস। প্রতিবেদনে বলা হয়- ‘ভিডিও ফুটেজ হইতে প্রাপ্ত ছবি দেখে যাহাদেরকে আসামি হিসাবে সন্দিগ্ধকরণ হইয়াছে, তাহারা ছাত্রাবাসে আগুন লাগার পর হাতে দা, লাঠিসোটা ও মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিল করিয়াছিল। তাছাড়া তাহাদেরকে ঘটনাস্থলের আশেপাশে ঘুরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে।’ এরপরও সন্তুষ্ট হননি তদন্ত কর্মকর্তা। প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী না পাওয়ায় মামলার টুঁটি চেপে ধরেন। অথচ ঘটনার পরদিনই উপাধ্যক্ষ আল হেলাল ভূঁইয়াকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ২০১২ সালের ২৯শে  আগস্ট দু’জন প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ, দমকল বাহিনীর সদস্য ও ২৩ জন ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রের সাক্ষের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি কলেজ অধ্যক্ষের কাছে ২০০ পৃষ্ঠার এক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে ছাত্রাবাস পোড়ানোর ঘটনায় বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দায়ী করে তাদের চিহ্নিতও করা হয়।
২০১২ সালের ৮ই জুলাই ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ-ছাত্র শিবিরের সংঘর্ষের জেরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় এমসি কলেজের শতবর্ষী ছাত্রাবাসে। অগ্নিসংযোগের পর জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি পংকজ পুরকায়স্থ, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দেবাংশু দাস মিঠুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছাত্রাবাসের সামনে মিছিল করে। পরদিন সংঘর্ষ এবং ছাত্রাবাস পোড়ানোর ঘটনায় শাহপরান থানায় মামলা (নং ০৪) দায়ের করেন ছাত্রলীগ কর্মী শওকত হোসেন মানিক। পরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আলাদা দু’টি মামলা করেন শিবিরকর্মী আতিকুর রহমান ও জহিরুল ইসলাম। ১৫ই জুলাই দায়ের করা মামলায় (নং-৪৭/১২) কলেজের ইংরেজি বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রাবাসের ২য় ব্লকের ২১১নং রুমের বাসিন্দা শিবিরকর্মী আতিকুর রহমান ছাত্রলীগের ৪১ নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করেন। ১৮ই জুলাই দায়ের করা মামলায় (নং ৫২/১২) আদালতে ছাত্রাবাসের ১ম ব্লকের ১০৬ নং রুমের বাসিন্দা এবং গণিত বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র শিবিরকর্মী মো. জহিরুল ইসলাম অভিযুক্ত করেন ছাত্রলীগের ৫১ নেতাকর্মীকে। উভয় মামলায় অভিযুক্তের তালিকায় ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি পংকজ পুরকায়স্থ, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দেবাংশু দাস মিঠু, এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তাজিম উদ্দিন, ছাত্রলীগ নেতা এস.আর রুমেল, মিঠু তালুকদার, গোলাম হাসান চৌধুরী সাজন, রায়হান আহমদ, আবদুল্লাহ আনোয়ার, আলাওল হোসেন সুনান, দেলোয়ার হোসেন, শওকত হোসেন মানিক, সোহেল আহমদ।
চূড়ান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে,  প্রতিবেদন দাখিলকারী কর্মকর্তা তদন্তে কোন  ধরনের অতিরিক্ত পরিশ্রমের চেষ্টা করেননি। প্রতিবেদনে তিনি নিজেই উল্লেখ করেন, তদন্তের দায়িত্বভার পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও আগের তদন্ত কর্মকর্তার করা ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র, সূচিপত্র থাকায় তিনি নতুন করে সেগুলো আর প্রস্তুত করেননি। প্রতিবেদনে স্পষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা একমাত্র ভিডিও ফুটেজের উপর নির্ভর করেই চূড়ান্ত মীমাংসায় পৌঁছেছেন। প্রতিবেদনে তিনি ছাত্রলীগ কর্মী শওকত হোসেন মানিকের দায়ের করা মামলার অভিযুক্ত শিবিরকর্মীদের ‘ক্যাডার’ হিসেবে চিহ্নিত করলেও শিবিরকর্মীদের দায়ের করা মামলার অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ব্যাপারে চুপ থাকেন। এমনকি এ দু’টো মামলার অভিযোগ মিথ্যা বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি ইন্সপেক্টর মো. এনামুল হক মন্তব্য করেন, শওকত হোসেন মানিকের  দায়ের করা মামলার দায় থেকে বাঁচতেই আতিক ও জহির মামলা দু’টো করেছেন।

চৌদ্দগ্রামে মন্ত্রীর পিএ সাংবাদিক মারলে কি হয়?

১৬ মার্চ ২০১৪, রবিবার,

রেলমন্ত্রীর পিএ মোশাররফ হোসেন ছবিটি ফেসবুক থেকে নেয়া

এক মিনিট কেন্দ্রে থাকলেই তোদের লাশ পড়বে, সাংবাদিক মারলে কি হয়? এই মুহূর্তে কুমিল্লা ছাড়বি। তা না হলে  তোদের সবগুলোকে পুলিশে দেবো। এভাবে ঢাকা থেকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে উপজেলা নির্বাচন কাভার করতে আসা বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশনের সাংবাদিকদের হুমকি দেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের পিএ মোশাররফ হোসেন। পাশাপাশি সকাল থেকেই এ উপজেলার  ১০৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭৩টি কেন্দ্র দখলে নেয় মন্ত্রীর লোকজন।  মন্ত্রীর নিজ কেন্দ্র শ্রীপুরের নাটচরে ১৯ দল সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট সোহেলকে লাথি দিয়ে বের করে দেয় মন্ত্রীর লোকজন।  এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনাকে ভোট ডাকাতির উৎসব হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ১৯ দলীয় জোটের নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ। আর ১৯ দল সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন স্থগিত চেয়ে আজ অর্ধদিবস হরতাল  দিয়েছেন চৌদ্দগ্রামে।
সকাল ১০টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার অশ্বদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পৌঁছলে দেখা যায়, রেলমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী মোশাররফ হোসেন শতাধিক ক্যাডার নিয়ে কেন্দ্রের সামনে মহড়া দিচ্ছেন। এ সময় তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন। সাংবাদিকরা কেন্দ্র পরিদর্শন করতে চাইলে তিনি ক্ষেপে যান। পাল্টা সাংবাদিকদের পরিচয় জানতে চান। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে নিজেকে মন্ত্রীর পিএ পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের আটক করে পুলিশে দেয়ার হুমকি দেন। এ সময় মোশাররফের ক্যাডার বাহিনী সাংবাদিকদের ঘিরে ধরে গালাগাল করে। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের টানাহেঁচড়া করতে থাকে। মোশাররফ সাংবাদিকদের মারার জন্য লাঠি আনতে নির্দেশ দেন তার ক্যাডার বাহিনীকে। পরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে জোরপূর্বক ধাক্কা দিয়ে সাংবাদিকদের গাড়িতে তুলে দেন তিনি। এ প্রতিবেদকের মুঠোফোনটিও জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেন মোশাররফ। মোবাইল ফোনটি ফেরত চাইলে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
ফোনটি কয়েক ঘণ্টা নিজের কাছে রেখে বিকালে তা ফেরত দেন স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে। মন্ত্রীর পিএ’র উপস্থিতিতেই কেন্দ্রের ভেতরে দেদারসে জাল ভোট চলছিল। আর ভোটার লাইনে যারা দাঁড়িয়েছিল তাদের রেশির ভাগের বয়স ১৮ বছরের নিচে ছিল। সেখানে প্রিজাইডিং অফিসার হাফেজ আহমেদ ও সরকার সমর্থক আনারস প্রতীকের এজেন্ট ছাড়া অন্য কোন চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্ট ছিল না। এই কেন্দ্রের ৩৩৭০ ভোটের মধ্যে সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৪০০ ভোট কাস্ট হয়। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের  ওপর চড়াও হয়ে হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর কর্মীরা। তাদের হামলায় উপজেলার বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে আহত হন এনটিভির সিনিয়র রিপোর্টার শফিক শাহীন, চ্যানেল টুয়েন্টিফোর-এর স্টাফ রিপোর্টার মাকসুদ-উন-নবী, জেলা করেসপন্ডেন্ট আশিকুন নবী সোহেল এবং একই উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের কুনকুট ভোট কেন্দ্রে যায়যায়দিনের স্টাফ রিপোর্টার কামরুজ্জামান বাবলুর ওপর হামলা চালান ইউপি চেয়ারম্যান। হামলার পর তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হয়। সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, শনিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পরপরই আওয়ামী সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুস সোবহান ভুইয়া হাসানের সমর্থিত কর্মীরা উপজেলার  জগন্নাথ, আলকোরা ও গুণবতী ইউনিয়নের সব ক‘টি কেন্দ্রসহ মোট ৭৩টি ভোট কেন্দ্র তাদের দখলে নিয়ে নেয়। এছাড়া কাশিনগর ইউনিয়নের কাশিনগর বাজার মাদরাসা কেন্দ্র, কাতালিয়া কেন্দ্র এবং শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর, পদুয়া ও নারচর পুরো দখলে নিয়ে এজেন্টদের জোরপূর্বক কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে সিল মারে আনারস প্রতীকে। উপজেলার তারাসাইল কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার গোলাম মহিউদ্দিন আজিমকে জোরপূর্বক  বের করে দিয়ে তার কাছে থাকা ব্যালট পেপার, সিল ও ২১টি ভোট দেয়ার মুড়ি ছিনতাই এবং হিঙ্গুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে বিরোধীদলীয় প্রার্থীর এজেন্টকে বের করে দেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুর রহমান। আওয়ামী লীগের নেতা হাসেম বিল্লাহর নেতৃত্বে মর্কোটা ভোট কেন্দ্রে অস্ত্র নিয়ে হামলা চালালে ১২ জন আহত ও ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়। রেলমন্ত্রীর কেন্দ্র শ্রীপুরের নাটচরে  সকাল   ৯টায় ১৯ দল সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট সোহেলকে লাথি দিয়ে বের করে দেয় মন্ত্রীর লোকজন। ১৯ দলের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুল হুদা  ও পোলিং এজেন্ট সোহেল মানবজমিনকে এ অভিযোগ করেন। এসব চিত্রের পাশাপাশি কাশিনগর ইউনিয়নের কাশিনগর ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বাহারের নেতৃত্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা জাল ভোটের উৎসব পালন করে। তবে এসব চিত্র সকল কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা দেখলে তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন। অনেক জায়গায় পুলিশকে আওয়ামী লীগের কর্মীদের জাল ভোট দিতে সহায়তা করতেও দেখা গেছে। এসব কেন্দ্রে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের লাইনে দাঁড়িয়ে ভুয়া নাম্বার স্লিপ দিয়ে ভোট দিয়েছে।
এদিকে, ১৯ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক দলের নেতা জাতীয় পার্টি (একাংশের) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ উপজেলা বিএনপি অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। পাশাপাশি তিনি আজ রোববার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় অর্ধ দিবস হরতাল আহ্বান করেন।  তিনি বলেন, এটা নতুন অভিজ্ঞতা হলো। তিনি বলেন, ভোটের আগের রাতে মন্ত্রী পতাকা উড়িয়ে প্রটোকল নিয়ে ঘুরে ভোট ডাকাতির নির্দেশ দেন। কাজী জাফর বলেন,  আমরা আগেই প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এই চিত্র তুলে ধরেছি। কিন্তু আমাদের বক্তব্য আমলে নেয়নি  কমিশন। নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে ভোট ডাকাতির উৎসব হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা ১৯ দলের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুল হুদা বলেন, শনিবার রাত থেকেই বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ভোট ডাকাতির মহোৎসব  হয়েছে- যা কুমিল্লাবাসী এই প্রথম দেখলো। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. নয়ন বাঙ্গালী, জামায়াত নেতা আব্দুস সাত্তার, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সাহাবুদ্দিন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রাহেনা আক্তারসহ উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ।

Punishment for rape under Bangladeshi laws

1520700_543494415741878_941575980_n

Rape is not a new issue but recently the number of committing rape has been increased. So every people of the country should know about the punishment for rape.
What is rape? Generally speaking rape is a sexual intercourse with a woman without her consent. According to section 375 of the Bangladeshi penal code 1860 (Act XLV of 1860) – A man is said to commit “rape” who except in the case hereinafter excepted, has sexual intercourse with a woman under circumstances falling under any of the five following descriptions:
Firstly, Against her will.
Secondly. Without her consent.
Thirdly. With her consent, when her consent has been obtained by putting her in fear of death, or of hurt.
Fourthly. With her consent, when the man knows that he is not her husband, and that her consent is given because she believes that he is another man to whom she is or believes herself to be lawfully married.
Fifthly. With or without her consent, when she is under fourteen years of age.
Explanation. Penetration is sufficient to constitute the sexual intercourse necessary to the offence of rape.
Exception. Sexual intercourse by a man with his own wife, the wife not being under thirteen years of age, is not rape.
Punishment for rape: punishment for rape has been described both The Prevention of Oppression against Women and Children Special Act 2003 ( Nari O Shishu Nirjatan Daman Bishesh Ain 2003) and The Bangladeshi Penal Code 1860.
Punishment for rape under The Nari O Shishu Nirjatan Daman Bishesh Ain 2003):
According to section 9 of this Act –
i. Whoever commits rape with a woman or a child shall be punished with rigorous imprisonment for life and with fine.
Explanation: Whoever has sexual intercourse without lawful marriage with a woman not being under fourteen years of age, against her will or with her consent obtained, by putting her in fear or by fraud, or with a woman not being above fourteen years of age with or without her consent, he shall be said to commit rape.
ii. If in consequence of rape or any act by him after rape, the woman or the child so raped, died later, the man shall be punished with death or with transportation for life and also with fine not exceeding one lac taka.
iii. If more than one man rape a woman or a child and that woman or child dies or is injured in consequences of that rape, each of the gang shall be punished with death or rigorous imprisonment for life and also with fine not exceeding one lac taka.
iv. Whoever attempts on a woman or a child to cause death or hurt after rape, he shall be punished with rigorous imprisonment for life and also with fine.
b) To commit rape, he shall be punished with imprisonment for either description, which may extend to ten years but not less than five years rigorous imprisonment and also with fine.
v. If a woman is raped in the police custody, each and every person, under whose custody the rape was committed and they all were directly responsible for safety of that woman, shall be punished for failure to provide safety, unless otherwise proved, with imprisonment for either description which may extend to ten years but not less than five years of rigorous imprisonment and also with fine.
Punishment for rape under Penal Code:
According to section 376 of this Code –
Whoever commits rape shall be punished with imprisonment for life or with imprisonment of either description for a term which may extend to ten years, and shall also be liable to fine, unless the woman raped is his own wife and is not under twelve years of age, in which case he shall be punished with imprisonment of either description for a term which may extend to two years, or with fine, or with both.

 

শিশু সামিউল হত্যা মামলায় বাদিকে হুমকির অভিযোগ

রাজধানীতে শিশু সামিউল হত্যা মামলার প্রধান আসামি জামিনে বেরিয়ে আদালতে সাক্ষ্য না দিতে বাদিকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রায় চার বছর আগে আদাবরে খুন হয় পাঁচ বছর বয়সী খন্দকার সামিউল আজিম ওয়াফি।

ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আমনিুল হকের আদালতে বিচারাধীন আলোচিত এ মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি  হাই কোর্ট থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন প্রধান আসামি  মো. শামসুজ্জামান আরিফ ওরফে বাক্কু।

এরপর এ মামলায় আদালতে আর কোনো সাক্ষ্য না দিতে তিনি মামলার বাদি সামিউলের বাবা কে আর আজমকে হত্যার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গত ১৫ মার্চ  পল্লবী থানায় একটি জিডি করেন আজম।

শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে হাই কোর্টের জামিন  আদেশ ও জিডির অনুলিপি সরবরাহ করেন কে আর আজম।

সামিউল হত্যা: এশা-বাক্কুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

হাই কোর্টের আদেশে দেখা যায়, বিচারপতি মো. নিজামুল হক ও মো. জাহাঙ্গীর হোসাইনের বেঞ্চ গত ২০ ফেব্রুয়ারি বাক্কুকে চার সপ্তাহের জন্য জামিন দেয়।

জিডিতে বলা হয়, “হুমকি-ধামকির এক পর্যায়ে গত শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে মিরপুর ১২ নম্বর বাস স্ট্যান্ডে বাক্কু আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, আগামী ২০ মার্চ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের ধার্য তারিখে কোনো সাক্ষী যেন হাজির না হয়।”

এরপর রাষ্ট্রপক্ষে কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হলে আজমকেও ছেলের মতো পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।

মায়ের ‘পরকীয়া’র জেরে ২০১০ সালের ২৩ জুন রাতে আদাবরে নিজেদের বাসায় সামিউল খুন হয় বলে মামলার বিবরণে বলা হয়।

এ ঘটনায় সামিউলের মা আয়েশা হুমায়রা এশা (২৫) এবং তার প্রেমিক শামসুজ্জামান বাক্কুকে (৩৮)  আসামি করে আদাবর থানায় হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন সামিউলের বাবা কে আর আজম।

মামলার বিবরণে বলা হয়, বাক্কু ও এশার ‘অবৈধ’ সম্পর্ক দেখে ফেলায় সামিউলকে অপহরণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন বাক্কু।এরপর আদাবরে নবোদয় হাউজিংয়ে সামিউলদের বাসার পাশে তার লাশ বস্তাবন্দী করে ফেলে রাখা হয়।

২০১১ সালের  ২৫ অক্টোবর  তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার ওসি কাজী শাহান হক এ মামলায়  বাক্কু ও এশার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

পরের বছর ১ ফেব্রুয়ারি ওই দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। এর সাত দিনের মাথায় আদালতে বাদি আজমের জবানবন্দি ও জেরা গ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলার  সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে এ পর্যন্ত নয় জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

মামলার অন্য আসামি সামিউলের মা হুমায়রা এশা গত বছরের মাঝামাঝি হাই কোর্টে জামিন চাইলেও আদালত তাকে ফিরিয়ে দেয়।

বাংলাদেশের পথশিশুদের জন্য ৭ মহাদেশে দৌড়ালেন পর্তুগালের মারিয়া

 

 

বাংলাদেশের পথশিশুদের জন্য ১০ লাখ ডলারের একটি তহবিল সংগ্রহে সাত সপ্তাহেরও কম সময়ে সাত মহাদেশে ম্যারাথন শেষ করলেন এভারেস্ট জয়ী প্রথম পর্তুগিজ নারী মারিয়া কনসিয়েকাও।

শনিবার ঢাকায় ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে মারিয়া তার এই ‘৭৭৭ চ্যালেঞ্জ’ জয়ের ঘোষণা দেন।

মারিয়ার এই চ্যালেঞ্জ শুরু হয়েছিল গত ২৬ জানুয়ারি অ্যান্টার্কটিকায়। পর্যায়ক্রমে দক্ষিণ আমেরিকা, এশিয়া, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও উত্তর আমেরিকা হয়ে গত ৮ মার্চ তিনি সপ্তম ম্যারাথনে দৌড়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকায়।

প্রতিটি মহাদেশে ৫০ কিলোমিটার করে মোট সাতটি ‘আল্ট্রা ম্যারাথন’ শেষ করেন তিনি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের একদল স্বেচাছাসেবী এই অভিযাত্রায় মরিয়ার সঙ্গে ছিলেন।

সাবেক বিমানবালা মারিয়া বেশ কয়েক বছর আগে যাত্রাবিরতিতে ঢাকায় নামেন। তখনই এ দেশের পথশিশুদের দুর্দশা তাকে নাড়া দেয়। তাদের জন্য কিছু করার তাগিদ থেকেই তিনি গড়ে তুলেছেন মারিয়া ক্রিস্টিনা ফাউন্ডেশন (এমসিএফ)।

সংবাদ সম্মেলনে মারিয়া বলেন, ‘৭৭৭ চ্যালেঞ্জ’ জয়ে ছয় মাস প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি।

“সাত মহাদেশে আল্ট্রা ম্যারাথন শেষ করা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু ঢাকার রাস্তায় আমাদের শিশুদের প্রতিদিন যে সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয়, তার তুলনায় আমার চ্যালেঞ্জ কিছুই নয়।”

গত নয় বছরে মারিয়ার ফাউন্ডেশন কয়েকশ শিশুর শিক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে, তাদের জীবন বদলে দিয়েছে।

অন্তত ৩৫ জন বাংলাদেশিকে আরব আমিরাত ও ওমানে কাজ দিয়েছে এই ফাউন্ডেশন।

 

‘ফেল্টু’ আইনস্টাইন

ছোটবেলায় যখনই কেউ অঙ্কে ভালো করে বা বিজ্ঞানে তার প্রতিভা দেখায়, তখনই তাকে বলা হয় খুদে আইনস্টাইন। আর একটু বড় হলে, বিশেষ করে হাই স্কুলে বা কলেজে একই ভাবে বলা হয় তরুণ আইনস্টাইন। কেবল বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বের বেশির ভাগ বাবা-মাই তাদের সন্তানদের আইনস্টাইন বানাতে চান!

1

0

604

কেন? জবাবটা সোজা– বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন বিশ্ব (টহরাবৎংব), সময় (ঞরসব) ও স্থান (ঝঢ়ধপব) সম্পর্কে মানুষের হাজার বছরের ধারণাকে পাল্টে দিয়েছেন। এই সময়ের সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং মনে করেন, কোনো একদিন আসবে, যে দিন সময়ের কিংবা দুনিয়ার সম্পূর্ণ ইতিহাস লিখে ফেলা যাবে চার পৃষ্ঠায়, আর তার তিন পৃষ্ঠা জুড়ে থাকবে কেবল আইনস্টাইনের নাম! কাজেই সব বাবা-মা যদি তাদের সন্তানকে আইনস্টাইন বানাতে চান, তাদের কি দোষ দেওয়া যায়?

সব দেখেশুনে মনে হতে পারে, ছোট বেলাতেও আইনস্টাইন ছিলেন একেবারে তুখোড় ছাত্র। ক্লাশে তার জুড়ি নেই কোনো। বিজ্ঞানে আর গণিতে ক্লাসে কেবল শিক্ষকের সঙ্গে তার পাল্লা চলে। শিক্ষক যে কোনো প্রশ্ন করলেই প্রথম উত্তর দেন তিনিই, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু ঘটনা কি আসলেই তাই?

গণিতের রাজ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা হল পাই (৩.১৪)। সহজ করে বললে, বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের অনুপাতকে পাই বলা হয়। পাইয়ের মান ৩.১৪ বলা হলেও, আসলে এর মান কিন্তু এখনও সম্পূর্ণ নির্ধারণ করা যায়নি। দশমিকের পর এর মান অসীম পর্যন্ত (৩.১৪১৫৯২৬৫৩৫৮৯৭৯৩২৩৮৪৬২৬৪৩৩…)। সংক্ষেপে এর মান ধরা হয় ৩.১৪।

মার্কিন রীতিতে তারিখ লেখার সময় মাস আগে লেখা হয়, দিন লেখা হয় পরে; মানে মার্চের ১৪ তারিখ হয় এ রকম– ৩.১৪.****। আর তাই দিনটিতে পাই দিবস হিসেবে পালন করা হয়। 

ঘটনাক্রমে আইনস্টাইনের জন্মও এই পাই দিবসে। ১৮৭৯ সালের ১৪ মার্চ জার্মানির উল্ম শহরে, হারম্যান-পাউলিনের ঘরে তার জন্ম। কিন্তু তার ছোটবেলা কেটেছে মিউনিখে।

জন্মের সময় আইনস্টাইন বেশ নাদুসনুদুস ছিলেন। সহজে কথাই বলতে পারতেন না। কথা বলার সময় নাকি শব্দই খুঁজে পেতেন না। তোতলা অবশ্য ছিলেন না তিনি।

ছোটবেলায় বাবা তাকে একটি কম্পাস উপহার দেন। আইনস্টাইনের কাছে এই কম্পাসটি ছিল এক বিস্ময়কর বস্তু। কাঁটাটি কেমন সব সময় উত্তর দিকে মুখ করে থাকে! কী তাজ্জব ব্যাপার!

ছয় বছর বয়সে মিউনিখেই স্কুলে যেতে শুরু করেন তিনি। আর তার মায়ের ধারণা সত্যি প্রমাণ করে তিনি সেখানে ক্রমাগত খারাপ করতে থাকেন। একে তো ঠিক মতো কথাই বলতে পারেন না, তার উপর কোনো দিনই ঠিকমতো পড়া করতেন না। পড়া না পারা স্কুলে তার নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে গেল। সব মিলিয়ে শিক্ষকরা তাকে মোটেই পছন্দ করতেন না। এমনকি কোনো কোনো শিক্ষক তো তাকে ক্লাস থেকে বেরই করে দিতেন। স্কুলে তার তেমন কোনো বন্ধুও ছিল না। বাসায় ফিরে তাসের ঘর সাজানো আর বোন মারিয়ার সঙ্গে খেলে গল্প করে তিনি বড় হতে থাকেন।

নয় বছর বয়সে ভর্তি হলেন বড়দের স্কুলে। তবু তার পড়ালেখার তেমন কোনো উন্নতি হল না। তবে আগ্রহ বাড়তে শুরু করল বিজ্ঞানে আর গণিতে। এর কারণ ছিল দুটি– প্রথমত তার কাকা তাকে প্রায়ই গণিত আর বিজ্ঞানের বই উপহার দিতেন। অপর দিকে মেডিকেলের শিক্ষার্থী ম্যা· তামুদ ছিলেন তাদের পারিবারিক বন্ধু। ম্যা· প্রতি বৃহস্পতিবার তাদের সঙ্গে ডিনার করতে আসতেন। তখন আইনস্টাইনের জন্য নিয়ে আসতেন জনপ্রিয় বিজ্ঞান ও দর্শনের বই। আর সেগুলো পড়ে খুবই আনন্দ পেতেন তিনি। ম্যা·ের দেওয়া একটি জ্যামিতির বই-ই তাকে নতুন করে চিন্তা করতে শেখায়।

তবে আইনস্টাইনের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ জ্যামিতির প্রতি নয়, ছিল ক্যালকুলাসের প্রতি। ১২ বছর বয়স থেকেই তিনি ক্যালকুলাস শেখার চেষ্টা করেন। স্কুলে যদিও তখনও ক্যালকুলাসের কোনো বালাই ছিল না।

ব্যবসায়ে ব্যর্থ হয়ে ১৮৯৪ সালে ওদের পরিবার ইতালির মিলানে চলে যায়। পড়ালেখা শেষ করার জন্য তাকে রেখে যাওয়া হয় মিউনিখে। তিনি কিন্তু স্কুলে পড়তে তেমন উৎসাহী ছিলেন না। ছয় মাসের মাথায় একজন ডাক্তারকে রাজি করিয়ে অসুস্থতার সার্টিফিকেট জোগাড়ও করে ফেলেন। আর তাই দিয়ে নেন স্কুল থেকে ছুটি। স্কুলের পড়া শেষ না করেই চলে যান বাবা-মায়ের কাছে।

আইনস্টাইন তো মহানন্দে চলে এলেন মিলান। তার বাবা-মা কিন্তু তাতে বেশ চিন্তায় পড়ে গেলেন। কারণ তখন হাই স্কুল পাস না করলে কোথাও ভর্তি-ই হওয়া যেত না। পরে তার বাবা-মা অনেক খুঁজে খুঁজে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে বের করেন এমন এক প্রতিষ্ঠান, যেখানে তাকে ভর্তি করানো যেতে পারে। নাম ‘ফেডারেল পলিটেকনিক স্কুল’। 

আইনস্টাইন ভর্তি হলেন সেখানে। এবং সাফল্যের সঙ্গে প্রায় সব বিষয়েই ফেল করলেন, গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান ছাড়া। ওই দুটি বিষয়ে অবশ্য নম্বর ভালোই পেয়েছিলেন।

শেষ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ নিয়ম ভঙ্গ করে তাকে ভর্তির শেষ সুযোগ দিলেন। সঙ্গে শর্ত জুড়ে দিলেন, তাকে আগে হাই স্কুল শেষ করতে হবে।

কী আর করা! আইনস্টাইন পাশের আরাউ শহরের একটি বিশেষ স্কুল থেকে ১৭ বছর বয়সে হাইস্কুল পাশ করে চলে আসেন জুরিখ পলিটেকনিকে। সেখানে ভর্তি হওয়ার পর অবশ্য শিক্ষক ও বন্ধুদের সঙ্গে তার ভালোই সখ্যতা গড়ে ওঠে।

আর শেষ পর্যন্ত তিনি বিজ্ঞানের রাজ্যে কী কী করেছেন, পদার্থবিজ্ঞানকে এগিয়ে নিতে তার অবদান কতটুকু, সে কী আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে!

সুতরাং কেউ ভালো রেজাল্ট করলেই তাকে ‘আইনস্টাইন’ বলা ঠিক না। বরং আইনস্টাইন তাদেরই বলা উচিত, যাদের গণিতে-পদার্থবিজ্ঞানে তুমুল আগ্রহ আছে।

৩৬ বছরে পা রেখেছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র

৩৬ বছরে পা রেখেছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। ১৪ মার্চ শুক্রবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৩৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান। ঢাকা কলেজের জনপ্রিয়তম শিক্ষক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ১৯৭৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু করেন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র।

গত সাড়ে তিন দশকে সারাদেশে, এমনকি দেশের বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে এর কর্মকাণ্ড। বহুধা বিস্তৃত এই কর্মকাণ্ডের নানা আঙ্গিক সময়ে সময়ে বদলেছে। এখানকার অর্থযোগের চেহারা পাল্টেছে। ব্যবস্থাপনার মান পরিবর্তিত হয়েছে। প্রযুক্তি আর পেশাদারিত্বে পরিবর্তন এসেছে।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে রুচি ও উন্নত মূল্যবোধের যে নিম্নগামিতা অবশ্যম্ভাবী হয়েছে, তার প্রভাব আমাদের রাজনীতিতে খুবই প্রকট হয়ে দেখা যাচ্ছে। এই নিম্নমানের অপরিশীলিত, ব্যক্তিপূজাকেন্দ্রিক রুচিহীন রাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষের চেতনাজগতে বিপরীত ধারার সৃষ্টির চেষ্টার জন্য যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র তার অন্যতম।

ঢাকা শহরসহ জেলা শহরগুলোতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মোবাইল লাইব্রেরি কার্যক্রম, সারাদেশের হাজার হাজার স্কুল-কলেজে বই পাঠের মাধ্যমে প্রতি বছর লাখ-লাখ শিক্ষার্থীর জন্য মানবিক উৎকর্ষ কার্যক্রম, বই পড়ে বই পুরস্কার দেয়ার প্রণোদনামূলক কার্যক্রম, আলোর ইশকুলের মাধ্যমে সঙ্গীত-শিল্পকলা-চিত্রকলা-রাজনীতি-ইতিহাস-সমাজ বিষয়ে নিয়মিত পাঠচক্রে সুদীর্ঘ নিরবচ্ছিন্ন পাঠ কার্যক্রম, ইংরেজি শিক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে সহজে বাংলা অর্থ ও উচ্চারণসহ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সাহিত্য ইংরেজিতে পাঠ কার্যক্রম, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রকাশনার মাধ্যমে বাজারে কাটতিহীন অথচ চিরায়ত সাহিত্য-দর্শনের বইয়ের প্রকাশনা অব্যাহত রাখা ও বই বাজারে তা সরবরাহ করাসহ অনলাইনে বই পাঠের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়ে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রায় নিভৃতে প্রতিবছর লাখ-লাখ তরুণ হৃদয়কে আলোড়িত করছে।

রাজধানীর বাংলামটরের নিজস্ব ভবনে ৩৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে সারাদিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালার।

টি-২০ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী কনসার্ট নিয়ে বিখ্যাতজনেরা যা বলছেন

বাপ্পা মজুমদার লিখেছেন-Downloads17 (1)
“Bodh” bole ekta shobdo achhe jeta kichhu kichhu organiser bhule jaan …
Durbhaggo … Amader desh er shilpi kool er …

সাথে তিনি আরও লিখেছেন- “নির্বোধ এবং হাস্যকর”

সংগীত শিল্পী তাহসান লিখেছেন- 
অনেক দিন আগের কথা। আমার এক ভাতিজা নতুন এক হিন্দী সিনেমার গান গাইছিলো। কথাগুলো এমনঃ
“ফির ভি দিল হেই হিন্দুস্তানি”।

আমি বকা দিয়ে বলি, তুই বাংলাদেশী বাঙ্গালী হয়ে…
আমাকে শেষ করতে না দিয়ে ও বললঃ
“আমার দেশে এ আর রহমান আছে? সাহরুখ খান আছে? টেন্ডুল্কার আছে?”

উত্তর দিতে পারিনি।

আজ চেষ্টা করব।

প্রতিভার মাপে হয়তো আমরা অনেক ক্ষুদ্র। কিন্তু যতটুকু প্রতিভা এ দেশে আছে তার মর্যাদা থাকলে হয়তো প্রতিভার শিখরে এদেশেও কেও থাকতে পারতো।

সংগীত শিল্পী প্রীতম আহমেদ লিখেছেন- 
আজকের অনুষ্ঠানটির ভালো মন্দের কৃতিত্ব গ্রে এডভারটাইজিং ও ব্লুজ বা জ্যাজ নামের আরেকটি ইভেন্ট প্রতিষ্ঠানের | গ্রে বিদেশী প্রতিষ্ঠান বলেই হয়তো যে কোনো কাজ পেলেই বিদেশ থেকে করায় | আমি শিওর এদের যদি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত এর অডিও ভিডিও বানিয়ে দিতে বলা হয় ওটাও তারা অন্তত ভারত থেকে বানাবে | যাই হোক, দেখলাম দর্শক ও দেশী শিল্পীদের মধ্যে একটা ভালই ক্ষোভ তৈরী হয়েছে সাউন্ড, টাইম আর ইন্ডিয়া নিয়া | আমার কথা হইলো | যদি ইন্ডিয়ান শিল্পীই আনবেন তাইলে সানি লীয়নিরে আনলেন না ক্যান ?? আপা আসলেতো সাউন্ড, টাইম নিয়া কারো কোনো ঝামেলা হইতোনা | আবার দর্শক হিসেবে আমরাও মজা পাইতাম | ক্যামনে যে এরা এজেন্সি চালায় … যত্তসব |

প্রখ্যাত লেখক মইনুল আহসান সাবের লিখেছেন-
এ আর রহমানের গান শোনার জন্য অনেকে পঁচাত্তর হাজার টাকা গুনছেন, এ নিয়ে দেখছি বিশাল তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ভাইরে, এ তো গান শোনা। যারা এই খরচটা করছেন, তাদের অনেকেই এক রাতে আরও অনেককিছুতে এর চেয়ে বহুগুণ বেশি খরচ করেন।
তা ছাড়া আমাদের দেশের বিত্তবান মানুষের কাছে এটা এমনিতেও এমন কোনো টাকা না।

সাংবাদিক মেহেরুন রুনীর ভাই নওশের রোমান লিখেছেন-
ওপেনিং এর টিকেট জোগাড় করতে পারিনি তাই যেতে পারিনি কিন্তু মেঘ-ক নিয়ে জাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল তাই সন্ধায় একটু মন খারাপ লাগছিল।আমার এক বন্ধু-এর সাথে ফোন এ কথা হল ওরা মাঠে কনসার্ট দেখছে …মেঘ-এর ওদের সাথে খুব ভাল সম্পর্ক থাকায় ও জানতে চাইল ওরা কোথায় এবং জানার পর বলল আমরা কেন গেলাম না ? আমি বললাম টিকেট পাইনি তাই যাওয়া হয় নি।

এটা শুনে ও সাথে সাথে মেঝেতে শুয়ে চিৎকার করে কাদতে লাগল এবং জা বলল সেটা শুনে আমি কিছুক্ষনের জন্য চিন্তা শক্তি হারায় ফেললাম…আমি এততুকু একটা বাচ্চার থেকে কি শুনছি ” এই দেশ-এ সব কিছুতে টিকেট লাগে কেন আবার টিকেট পাওয়া যায় না কনে?? নাকি সব আমার সাথে এমন হয়?? আমার সাথে বাংলাদেশ এমন করে কেন??? আমি এইদেশ-এ থাকবো না ?? আমিও!! একটা ছুরি দিয়ে বাংলাদেশ-কে খুন করে ফেলব!!!!! বাংলাদেশ খুব খারাপ…আমার সাথে শুধু খারাপই করে…”

ওর মনে কত রাগ!! কত রাগ ও মনে পুশে রাখসে …এমনি ওর মনে কিছু প্রশ্ন খেলে ওর মিম্মি-বাবাকে জারা মারসে তাদের কেন এখনও ধরা হয় নি,এটা নিয়ে কেউ কেন কোন কথা বলে না? প্রধানমন্ত্রী কেন এটা নিয়ে কোন কথা বলে না ,আর কেউ কেন প্রধানমন্ত্রী কে জিজ্ঞাস করে না?? দুইটা মানুষ মারা গেলো এটা নিয়ে কার কোন মাথাব্যাথা নাই ??? প্রদর্শনীর জন্য আমরা যখন কাজ করছিলাম তখন ফোন-এ ভিডিও করতে করতে সে সবাইকে এই প্রশ্ন করছিল… আমার এতো ছোট বাচ্চাটার মনে এতো প্রশ্ন ,এতো ক্ষোভ?? ওর মনে কত কষ্ট, ও বুঝে যে ওর সাথে অন্যায় হচ্ছে, সেটা সে বুঝেও চেপে রাখা,এবং এভাবে সেটার বহিঃপ্রকাশ ঘটা, দেশ নিয়ে ওর ধারনা ,এতো ছোট মনে এরকম নেগেটিভ ধারনা…

সব কিছুই অনেক কঠিন দুশ্চিন্তায়,হতাশায় ফেলে দ্যায়। এমনি এরকম কোন জায়গায় মেঘকে নিতে পারিনি, কোনভাবেই টিকেট ম্যানেজ করতে পারিনি বলে খুব খারাপ লাগছিল ওর জন্য এটাও করতে পারি না কিন্তু ওর এতো অভিযোগ শুনে অনেক ভয় আর কষ্ট হচ্ছে। বিচার পাব কিনা জানিনা কিন্তু আল্লাহ যেন আমার বাচ্চাটার একটা সুন্দর জীবন দেয়। পসেটিভ চিন্তা নিয়ে জীবনে অনেক বড় হয়।

সংগীত শিল্পী আহমেদ রাজীব লিখেছেন- 
..Salute de spiritual musician AR Rehman! ..tobe ekta kotha aase…BCB N GREY tomader laal salam…LRB,Souls,Arnab,Runa layla,Sabina yasmin,KB,Momtaz ke 1/2/3 ta kore gaan korar shujog kore deyar jonno r Miles ke stage ei uthar shujog naa deyaar jonno…next time ekta kaaj korba ,shob boro artist er shaathe young 100 ta artist ke show te invite kore volunteer er kaaj koraba, stage jhharu deyaba etey oder utshaaho aaro baarbe..amra shilpira toh chhoto jaat,taai jaa khushi koro babara…tomra toh baanijjo bojho, amader ke bojhona !!

অভিনেতা স্বাধীন খসরু লিখেছেন-
What a waste ever in T20 launching concert in Bangabandhu national stadium…it was a total mess!!!

কনসার্টে যাওয়ার আগে ইবরার টিপু লিখেছিলেন-
I am so happy .. Going to watch A R RAHMAN CONCERT…. Thanks my dear sister for arranging ticket for me .. But amar OHI ke chara jacchi … Aktu monta kharap…. Tobe shukuralhumdulillah ….

সেলিব্রেটি ফেসবুকার আরিফ আর হোসেন লিখেছেন- 
…কনসার্টের আয়োজকরা, যেভাবে আমাদের দেশের সংগীত হিরোদের ট্রিট করছে, তাতে আমি ক্ষুব্ধ;

● মেইন সাউন্ড ব্যবহার করতে দিচ্ছে না… আলাদা সাউন্ড দেওয়া হয়েছে

● স্টেজ উঠে রিহার্সাল করতে দেয়নি

● বাংলাদেশের আর্টিস্টদের জন্য আলাদা সাধারণ গ্রীন রুম… যা নন এসি.

● কোথাও কোনো কমিউনিকেশনে তাদের নাম ব্যবহার করা হয় নাই

+ মাত্র শুনলাম, মাইলসকে উঠতে দেয়া হচ্ছে না

আচ্ছা… ধরেন, আজকে অনুষ্ঠানটা ইন্ডিয়াতে হচ্ছে… অর্গানাইজার ইন্ডিয়ান… এবং, ইন্টারন্যাশনাল আর্টিস্ট হিসেবে এসেছে পিংক-ফ্লয়েড

অবশ্যই পিঙ্ক-ফ্লয়েড, এ আর রহমানের থেকে এগিয়ে… কিন্তু আমি চোখ বন্ধ করে বলতে পারি, অর্গানাইজাররা সেই অনুষ্ঠানে তাদের এ আর রহমানকে যে টুকু হাইলাইট করবে, তার থেকে খুব বেশী পরিমান কিন্তু পিংক-ফ্লয়েডকে করবে না

…এই কমন সেন্সটার নামই ‘চেতনা’

আফসোস… আমরা চেতনা চেতনা করি; কিন্তু বিষয়টা আসলে কি, তাই বুঝি না

পয়েন্টটা সিম্পল; “অবশ্যই গুনীর কদর করা উচিত… কিন্তু নিজেদেরকে উপেক্ষিত রেখে, উহু অবশ্যই না

সুপ্রিম কোর্টে বিপুল ভোটে এগিয়ে বিএনপিপন্থীরা

: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০১৪-১৫ কার্যবর্ষের নির্বাচনে বিপুল ভোটে এগিয়ে আছেন বিএনপি পন্থীরা।

নির্বাচনে দু’দিনব্যাপী ভোটগ্রহণের শেষ দিন বৃহস্পতিবার রাত আটটায় ওই ভোট গণনা শুরু হয়েছে।

সর্বশেষপ্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদের মধ্যে অধিকাংশ পদেই জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল এগিয়ে রয়েছে।

ওই প্যানেল সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী  বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ৫১৭ ভোট   পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ সমর্থিত প্রার্থী সাবেক আইনমন্ত্রী এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু পেয়েছেন ৪৫৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সম্পাদক পদে বিএনপিপন্থী মাহবুবউদ্দিন খোকন পেয়েছেন ৫৭৫ ভোট।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীপন্থী রবিউল আলম বুদু পেয়েছেন ৪০৬ ভোট।

মানহানী

1520700_543494415741878_941575980_nমানহানি এমন এক ধরনের ধরনের অপরাধ, যেটি ফৌজদারি ও দেওয়ানি উভয় প্রকারেরই হতে পারে। ফৌজদারি আদালতে মানহানি মামলা হউয়ার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে, সে কারা কিংবা অর্থদন্ডে দন্ন্ডিত হন।

পক্ষান্তরে, দেওয়ানি আদালতে মামলা হলে এবং সেই মামলায় বাদি জয়ী হলে বিবাদী থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ আদায় করতে পারেন।

বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারা অনুসারে যে ব্যক্তি মানহানির উদ্দেশ্যে বা মানহানিকর জেনে বা পাঠের জন্য উদ্দেশ্যমূলক শব্দাবলি বা চিহ্নাদি বা দৃশ্যমান কল্পস্মৃতির সাহায্যে কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে এমনভাবে কোনো নিন্দাবাদ প্রণয়ন বা প্রকাশ করে যে, সেই নিন্দাবাদ উক্ত ব্যক্তির সুনাম নষ্ট করবে, সেই ব্যক্তি কিছু ব্যতিক্রম অবস্থা ছাড়া উক্ত ব্যক্তির মানহানি করেছে বলে ধরা হবে।

আইনে এমন কিছু ব্যতিক্রম অবস্থার বর্ণনা করা হয়েছে, যখন কোনো ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির নামে মানহানিকর কিছু বললে, লিখলে বা প্রচার করলেও দন্ডবিধির ৪৯৯ ধারার অধীনে মানহানির অভিযোগে অভিযুক্ত হতে হবে না। যেমন-

(১) জনগণের কল্যাণার্থে কারো প্রতি সত্য দোষারোপ করলে, তাতে মানহানি হবে না।

(২) জনগণের প্রতি সরকারি কর্মচারীর আচরণ সম্পর্কে সৎ বিশ্বাসে অভিমত প্রকাশ করলে তা মানহানির শামিল হবে না।

(৩) আদালতসমূহের কার্যবিবরণী প্রতিবেদন প্রকাশ করা মানহানির অন্তর্ভুক্ত হবে না।

(৪) যে কোনো জনসমস্যা সম্পর্কে কোনো ব্যক্তির আচরণ সম্পর্কে সৎবিশ্বাসে অভিমত প্রকশ করা মানহানির শামিল নয়।

(৫) আদালতে সিদ্ধান্তকৃত মামলার দোষ, গুণ বা সাক্ষীদের সম্পর্কে বা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আচরণ সম্পর্কে অভিমত মানহানির পর্যায়ে পড়বে না।

(৬) গণঅনুষ্ঠানের অনুষ্ঠানাবলি সম্পর্কে কোনো মতামত প্রদান মানহানি নয়।

(৭) কর্তৃত্বসম্পন্ন ব্যক্তির কাছে সৎবিশ্বাসে কারো সম্পর্কে অভিযোগ করা হলে সেটিও মানহানি হবে না। যেমন- পুলিশের কাছে কারো ব্যাপারে সৎ বিশ্বাসে অভিযোগ।

(৮) কোনো ব্যক্তি কর্তৃক তার বা অন্য কারো স্বার্থ রক্ষার্থে দোষারোপ করা মানহানি নয়।

(৯) গণকল্যাণার্থে সতর্কতা প্রদানের উদ্দেশ্যে কারো সম্পর্কে কিছু বলা হলে, সেটিও মানহানি হবে না।

বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির শাস্তি বর্ণনায় বলা হয়েছে, এই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয়বিধ দন্ডে দণ্ডিত হতে পারে। ৫০১ ও ৫০২ ধারা অনুসারে, মানহানিকর বলে পরিচিত বিষয় মুদ্রণ বা খোদাইকরণ সম্পর্কে এবং এর শাস্তি বর্ণিত হয়েছে।

#‎সোহান‬

“বিশ্বকাপের
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান … খবর
পাওয়া গেলো, বাংলাদেশের
শিল্পীদের যথেষ্ট
অবজ্ঞা করা হচ্ছে … তাদের জন্য
সাধারণ গ্রীন রুম রাখা …
স্টেজে মাইলসকে উঠতে দেয়া হয়
নাই … এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের
মেইন পোস্টারেই কোন
বাংলাদেশী শিল্পীর ছবি নাই …
বিদেশীদের পা চাটা আয়োজকদের
দ্বারা এইটাই সম্ভব !!
সবচেয়ে আশ্চর্য হলাম, দর্শকদের
আচরণে … মানুষটার নাম আইয়ুব
বাচ্চু … নামটুকুই যথেষ্ট … আর
কিছু বলা লাগে না … এই
মানুষটা স্টেজে গান
গাইতে উঠলেন … দর্শকদের
সাড়া নেই … তাদের তালি দিতে কষ্ট
হচ্ছিলো অনেক … আর পারলেন
না আইয়ুব বাচ্চু …
বলে ফেললেনঃ “আপনারা যারা কষ্ট
করে বাংলা গান শুনছেন তাদের অনেক
ধন্যবাদ … আপনাদের হাত না চলুক,
চোখ আর কান তো খোলা আছে …
এতেই চলবে, হাততালি এখন খরচ
করে লাভ নেই … হাততালি পরের
জন্য রেখে দিন, চোখ কান
খোলা আছে এটাই যথেষ্ট …
আপনারা ধৈর্য ধরে বাংলা গান
শুনছেন, তার জন্য অনেক ধন্যবাদ …
Love You Guyz … আর
একটি গান গাইবো কেবল !!”
আচ্ছা, একটা মানুষ কতটা কষ্ট
পাইলে এই কথাগুলা বলতে পারে ??
আচ্ছা একটা দেশের দর্শক
কতটা নির্লজ্জ হইলে দেশের
একজন কিংবদন্তী শিল্পীর
সাথে এরকম আচরণ করতে পারে ??
আমি শুনতে পেলাম, এ আর রহমান
এর নাম শুনতেই তাদের তালি আর
চিল্লাপাল্লা … একটু পর
AKON আসবে, আবার দর্শক
চিল্লাবে, তালি দিবে … AKON
গানের সুরে বলবেঃ “I WANNA
FUCK YOU … FUCK YOU”
সবার অনেক ভাল
লাগবে !! … … … হায় দর্শক, এই
দেশে থেকে, এই দেশে খেয়ে, এই
দেশটাকে, দেশের শিল্পীদেরকেই
সম্মান করতে পারো না … নিজের
মা এর সাথে দুর্ব্যবহার
করে অতিথির
সাথে হাসিমুখে কথা বলা …
তোমরাই পারো … ছি !! … … …
আইয়ুব বাচ্চু, আমাদের
ক্ষমা করবেন … ঐ স্টেজের কিছু
মানুষ দিয়েই পুরা দেশটা না …
স্টেজের বাইরে লক্ষ লক্ষ মানুষ
এখনো গুন গুন করেঃ “বোঝে না,
কেউ
তো চিনলো না বোঝে না আমার
কি ব্যথা চেনার মত কেউ
চিনলো না এই আমাকে !!” বাচ্চু
ভাই, আমরা চিনি … দেশের
অনেকগুলা মানুষ চেনে … চেনার মত
করেই চেনে … দেশের
অনেকগুলা মানুষ দেশের ডালভাত
চেনে … শুধু কিছু মানুষ দেশের
ডালভাতের
প্লেটে লাথি মেরে বিদেশের হটডগ
চেনে … তাদের জন্য করুণা !!
আপনার জন্য ভালোবাসা … দেশের
সবগুলা শিল্পীর জন্য
ভালোবাসা !!” বাংলাদেশ
আসলে sexy কিছু গান না শুনলে দর্শকদের তো সুড়সুড়ি লাগেনা,দিক্কার জানাই এই আয়োজকদের।
বাংলাদেশকে ভালোবেসে কি লাভ???

AMICUS CURIAE, Meaning & Definition

AMICUS CURIAE

If a petition is received from
the jail or in any other criminal matter if the accused is unrepresented then
an Advocate is appointed as amicus curiae by the Court to defend and argue the
case of the accused. In civil matters also the Court can appoint an Advocate as
amicus curiae if it thinks it necessary in case of an unrepresented party; the
Court can also appoint amicus curiae in any matter of general public importance
or in which the interest of the public at large is involved.

Definition: Latin term20130722033504_index
meaning “friend of the court”. The name for a brief filed with
the court by someone who is not a party to the case.

“… a phrase that literally
means “friend of the court” — someone who is not a party to the
litigation, but who believes that the court’s decision may affect its
interest.” William H. Rehnquist, The Supreme Court, page 89.

An amicus curiae (also
spelled amicus curiæ; plural amici curiae) is someone, not a party to
a case, who volunteers to offer information to assist a court in deciding a
matter before it. The information provided may be a legal opinion in the form
of a brief (which is called an amicusbrief when offered by
an amicus curiae), a testimony that has not been solicited by any of the
parties, or a learned treatise on a matter that bears on the case. The decision
on whether to admit the information lies at the discretion of the court. The
phrase amicus curiae is legal Latin and literally means “friend
of the court”.

Amicus curiae is a legal Latin
phrase, literally translated as “friend of the court”, that refers to someone,
not a party to a case, who volunteers to offer information on a point of law or
some other aspect of the case to assist the court in deciding a matter before
it. The information may be a legal opinion in the form of a brief, testimony
that has not been solicited by any of the parties, or a learned treatise on a
matter that bears on the case. The decision whether to admit the information
lies with the discretion of the court.